ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বানিয়েছে ৪ হাজার বাংলাদেশী

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

মালয়েশিয়া সরকারের রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম ‘মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম’ এ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, সরকারের বিভিন্নপর্যায়ের আমলা, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে নানা পেশার চার হাজারের বেশি নাগরিক ইতোমধ্যে নাম লিখিয়েছে। এরমধ্যে অনেকে সপরিবারে ব্যবসাবাণিজ্যের পাশাপাশি দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে।

মালয়েশিয়ার মিনিস্ট্রি অ্যান্ড ট্যুরিজম আর্টস অ্যান্ড কালচারের ওয়েব সাইটের সর্বশেষ তথ্য (২০১৮ সালের জুন) অনুযায়ী পৃথিবীর ১৩০টি দেশের ৪০ হাজার নাগরিক ‘মাইয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোমে’র (এমএম২এইচ) বাসিন্দা হয়েছে। যারা দেশটিতে সেকেন্ড হোমের বাসিন্দা হয়েছে তার মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে চীনা ও দ্বিতীয় জাপানীরা। আর তালিকার তৃতীয় স্থানেই রয়েছে বাংলাদেশের নাম।

পরিসংখ্যানে ঘেঁটে দেখা গেছে, মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোমে চাইনিজ ১১ হাজার ৮২০ জন। জাপানিজ চার হাজার ১৮ জন। আর বাংলাদেশীর সংখ্যা চার হাজার ১৮ জন। এরপর যথাক্রমে ব্রিটেন দুই হাজার ৬০৮ জন, দক্ষিণ কোরিয়া দুই হাজার ৬৯ জন, সিঙ্গাপুর এক হাজার ৪২১ জন, ইরান এক হাজার ৩৮১ জন, তাইওয়ান এক হাজার ৩৪৭ জন, পাকিস্তান এক হাজার ১৭ এবং ভারতের এক হাজার আটজন। ‘মাই এক্সপার্ট’ নামক ওয়েব সাইটে বাংলাদেশীদের বর্তমান শেয়ার সর্বোচ্চ ১০ পারসেন্ট অফ দ্য টোটাল মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম (এমএম২এইচ) প্রকল্পের বেনিফিশিয়ারি বলে উল্লেখ রয়েছে।

মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোমে আবেদনের ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের বয়স ৫০+ (বেশি) তাদের জন্য লিকুইড এসেট-এর পরিমাণ থাকতে হবে সাড়ে তিন লাখ মালয়েশিয়ান রিংগিত। বাংলাদেশী টাকায় ৭৩ লাখ টাকা। সাথে মাসিক আয় দেখাতে হবে ১০ হাজার মালয়েশিয়ান রিংগিত। অপর দিকে আবেদনকারী যাদের বয়স ৫০ এর নিচে তাদের জন্য লিকুইড এসেট থাকতে হবে পাঁট লাখ মালয়েশিয়ান রিংগিত। সাথে মাসিক আয় ১০ হাজার রিংগিত।

ভিসা পারমিট পাওয়ার আগে যাদের বয়স ৫০ এর নিচে তাদের জন্য মালয়েশিয়ান ব্যাংকে তিন লাখ রিংগিত ফিক্সড ডিপোজিট জমা করতে হবে। আবেদনকারী এক বছর পর সেখান থেকে দেড় লাখ রিংগিত উত্তোলন করতে পারবে। তবে দ্বিতীয় বছরে অবশ্যই একই পরিমান ব্যালেন্স লেনদেনের পর জমা থাকতে হবে মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম প্রোগ্রাম পর্যন্ত। অপর দিকে আবেদনকারী ৫০-এর ওপরে হলে দেড় লাখ রিংগিত দিয়ে ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে এক বছর পর আবেদনকারী তার জমা রিংগিত থেকে ৫০ হাজার রিংগিত উত্তোলন করতে পারবে। এই তালিকার আবেদনকারীকে অবশ্যই এক লাখ রিংগিত ব্যাংকে ব্যালান্স টাকা জমা রাখতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই প্রক্রিয়া ও নিয়ম মেনেই ২০০২ সাল থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত মোট দেশটিতে চার হাজার ১৮ জন বাংলাদেশী সেকেন্ড হোম প্রকল্পের বাসিন্দা হয়েছেন। সেই হিসেবে দেশ থেকে শুধু হুন্ডির মাধ্যমে সেকেন্ড হোম প্রজেক্টে নগদ টাকাই পাচার হয়েছে প্রায় চার হাজার ২১৯ কোটি টাকার মতো। যদিও মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ডে হোম প্রজেক্টটি দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম হওয়ার কারণে কোন কোন দেশের কতজন নাগরিক সেকেন্ড হোমের মালিক হয়েছেন সেই তথ্য মালয়েশিয়া সরকার অদ্যাবধি গোপন রেখেছে।

তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাসীন দল এবং সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সরকারি আমলা বিভিন্ন দফতর সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী পেশাজীবী এমনকি দেশটিতে শ্রমিক হিসেবে পাড়ি জমানোদের মধ্যে অনেকে সেকেন্ড হোমের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন এবং দেশটিতে বসবাসের পাশাপাশি ব্যবসাবাণিজ্য করছেন। কেউ কেউ আবার ফ্ল্যাট কিনে ভাড়া দিয়েছে। আবার কেউ ফ্ল্যাট কিনে জন্য পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছে।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর শহরের একটি কনডোনিয়ামের ভেতরে ৮-১০ জন বাংলাদেশীর সেকেন্ড হোমের বাসিন্দা হওয়ার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যেখানে ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা এবং ট্রাভেল এজেন্সির মালিকসহ অন্য পেশার বাংলাদেশীর নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গুলশানের একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক কামরুল হুদা দুই হাজার স্কয়ার ফিটের একটি ফ্ল্যাট কিনে ফেলে রেখেছেন। বাকি যাদের নামে ওই কনডোনিয়ামে ফ্ল্যাট রয়েছে তাদের মধ্যে দু’জন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।

মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম প্রজেক্ট ছাড়া বিপুল বিত্ত বৈভবের সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ কামরুল হুদার নামে দুই বছর আগেই দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনে ২০১৭ সালের ১২ নভেম্ব^রে ২৭/১ তিলপাড়া ঢাকার ফাইজুল্লাহ হাসান নামক ব্যক্তি উল্লেখ করেন, কামরুল হুদা একজন আন্তর্জাতিক মুদ্রা পাচারকারী, মাফিয়া ডন ও অবৈধ সম্পদের অধিকারী।

তিনি দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম বিক্রি করে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন, যুক্তরাজ্যে ও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অর্থ পাচার করছেন। বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংকে তার একাউন্ট আছে। অথচ তার দৃশ্যমান বৈধ আয়ের কোনো উৎস নাই। এর মধ্যে মালয়েশিয়ায় তার সেকেন্ড হোম (ফ্ল্যাট) রয়েছে। অভিযোগের পর কামরুল হুদাকে দুদকে তলবও করা হয়েছিল। সর্বশেষ কামরুল হুদার প্রতারণার শিকার হন গুলশানের অটো গ্যালাক্সির মালিক।

উল্লেখ্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকাসহ সারা দেশে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। ক্যাসিনোর সন্ধানে র্যাব পুলিশের বিশেষ অভিযানে ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগ নেতাদের হেফাজত থেকে বস্তা বস্তা টাকা আর ফিক্সড কোটি কোটি টাকার ব্যাংকের ডিপোজিট উদ্ধার হয়েছে। এখন সময় এসেছে মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের যেসব দেশে বাংলাদেশীরা সেকেন্ড হোম গড়ে তুলেছেন তাদের পরিচয় উদঘাটনের পাশাপাশি কিভাবে কাদের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা ‘নিরাপদে’ দেশ থেকে পাচার হয়েছে সেই রহস্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদঘাটন করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print