
মানুষের সবচেয়ে আপনজন তার বাবা-মা। কিন্তু চার বছরের ছোট্ট শিশু মাসান আরদিতের আপন কে? তার বাবা-মাই যে তাকে রাখতে চান না। যাতে বিস্মিত আদালতও। বিষয়টি নিয়ে পরস্পরকে দুষছেন দুপক্ষের আইনজীবী। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা বিপর্যস্ত করে তুলছে শিশুদের জীবন।
আদালতের বারান্দায় একমনে খেলছে, মাসান আরদিত। চার বছর তিন মাস বয়সী শিশুটি, নিষ্ঠুর এক বাস্তবতার শিকার।
ঢাকার সিএমএম আদালতে তার মা-বাবা জানিয়েছেন, মাসানকে তারা রাখতে চান না। বিবাহ বিচ্ছেদের পর, বাবা উঠেছেন একটি মেসে। সেখানে শিশুটিকে রাখার পরিবেশ নেই। আর সন্তানের খরচ চালানোর অক্ষমতার কথা বলছেন মা।
এমন ঘটনা অবাক করে দেয়, উপস্থিত সবাইকে। এ সময় আদালত প্রশ্ন রাখেন, বাবা-মা না দেখলে, ছোট্ট শিশুটির দায়িত্ব নেবে কে?
মাসানের মা সানজিদা শারমিন বলছেন, বাচ্চার বাবা তার কোনই খোজ নেই না, ভরোনপোশন ও দিচ্ছে না, তাহলে বাচ্চাটাকে আমি কিভাবে রাখবো?
তবে, বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি, বাবা মাহফুজ ইসলাম। দুপক্ষের আইনজীবীরাও একে অপরের উপর দোষ চাপালেন।
মাসানের বাবার আইনজীবী ইকবাল আহাম্মেদ খান বলেন, বাচ্চা নাবালক হলে ৭বছর বয়স পর্যন্ত আইন অনুযায়ী মার কাছেই থাকবে। অপরদিকে মাসানের মায়ের আইনজীবী আকলিমা ইসলাম বলছেন, বাচ্চা মা রাখতে পারবে কিন্তু বাচ্চার খরচ অবশ্যই বাবাকে দিতে হবে, না দিলে ভিন্নপথ অবলম্বন করতে হবে আমাদের।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ফাওজিয়া কর্মী ফিরোজ বলছেন, বিচ্ছেদের মামলা বিষাক্ত করে তুলছে এমন শিশুদের জীবন। তিনি বলছেন, আমাদের আদালত নারী ও শিশু বান্ধব নয়। আদালত দেখতে চান বলে অনেকেই ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে আসেন, কিন্তু সেখানে বাচ্চা নিয়ে ঢোকার মত পরিবেশ থাকে না।
২০১৩ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন এ দম্পতি। তবে, এরপর সময় যত গড়িয়েছে, দাম্পত্য কলহে ফাটল ধরেছে সম্পর্কে।