ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

স্ত্রী হাছিনার পরকিয়ার কারণে খুন হয় বাবা-মেয়ে!

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানার নিমতলায় এলাকায় মো. আবু তাহের (৪২) এবং তার মেয়ে বিবি ফাতেমা (৪)কে জবাইকে করে হত্যার ঘটনার পিছনে স্ত্রী হাছিনা আক্তারের পরকিয়া প্রেমের কারণ হিসেবে সন্দেহ করছে এলাকাবাসী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশের ধারণা পরকিয়ার কারণে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী হাছিনা আক্তার পরিকল্পিতভাবে স্বামী ও শিশু সন্তানকে হত্যা করেছে। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ নিহত আবু তাহেরের স্ত্রী হাছিনা আক্তার ও শ্যালিকা নাসিমা আক্তারসহ চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আটক স্ত্রী হাছিনা আক্তার নোয়াখালী জেলার চরপার্বতী এলাকার মো মোস্তফার মেয়ে। নিহত আবু তাহেরের বাড়িও নোয়াখালী জেলায়।

.

এর আগে গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বন্দর থানাা পুলিশ এলাকার শাহ আলম ভবন নামে একটি বাসায় থেকে বাবা ও মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গলায় ছুরিকাঘাতে বাবা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ধারালো ছুরিও উদ্ধার করে।

যদিও স্ত্রী হাছিনা আক্তারের দাবী ঘটনার দিন সকাল ৮ টার দিকে কাজে গিয়ে ৯টার দিকে এসে মেয়ে ফাতেমার লাশ খাটের উপর এবং স্বামী আবু তাহেরের লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। 

.

প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছে, ঘটনার ৩দিন আগে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তুলুম ঝগড়া হয়েছে।  স্ত্রীর হাছিনা আক্তারের পরনে একটি লাল শাড়িকে ঘিরে স্বামী আবু তাহেরের মনে সন্দেহ জাগে। এই লাল শাড়ি কে দিয়েছে কেন দিয়েছে এসব নিয়ে ঝগড়া হয় বলে প্রতিবেশীরা বলেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী লোকজন জানান, হাছিনা মানুষের বাসায় বুয়ার কাজ করতেন। আর স্বামী তাহের গুদাম শ্রমিকের কাজ করতেন।

যে গুদামে তাহের শ্রমিকের কাজ করতেন সেই গুদামের শ্রমিক নেতা মাইনুদ্দিনের সাথে হাছিনার পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। মাইনুদ্দিনের বাড়িও নোয়াখালি সূবর্ণচরে। গত ১৭ আগস্ট হাছিনাকে একটি লাল রঙের শাড়ি উপহার দেন মাইনুদ্দিন। এ শাড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়দিন ধরে তাহেরের সাথে তার স্ত্রীর প্রায় সময় ঝগড়া লাগতো।

প্রতিবেশী বিলকিস বেগম বলেন, গত ১৭ অক্টোবর সকালে গোসল করে একটি লাল শাড়ি পড়েছিল হাছিনা আক্তার। ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় আমাদের সাথে কথা বলার সময় আবু তাহের স্ত্রীর পড়নে লাল শাড়িটি দেখে নানা প্রশ্ন করতে শুরু করে। হাছিনা বলেছিল বাড়িওয়ালার বাসায় কাজ করতে গিয়েছিল। তার বউই শাড়িটি তাকে উপহার হিসেবে দিয়েছে। কিন্তু আবু তাহের এ কথা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চায়নি। সে বারবার বলছিল, হাছিনার কোন ঘনিষ্ট বন্ধু শাড়িটি তাকে দিয়েছে এবং তাকে দেখানোর জন্যই শাড়িটি পড়ে সে বাইরে ঘোরাঘুরি করছিল। একপর্যায়ে এই নিয়ে দুইজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হয়। বিলকিস বেগম আরো বলেন, আবু তাহেরের সন্দেহের বাতিক ছিল। সামান্য কিছু হলে স্ত্রীকে সন্দেহ করতো, মারধর করতো।

অন্য প্রতিবেশীরা জানিয়েছে,গুদাম শ্রমিক নেতা মাইনুদ্দিন একই এলাকায় থাকে। মাঝে মাঝে হাছিনার ঘরে আসতো। মাইনুদ্দিনের সাথে অনৈতিক কিছু দেখে ফেলার কারণে তাহের ও তার শিশু কন্যা খুনের শিকার হয়েছে বলে তাদের ধারণা।

এদিকে ঘটনার পর থেকে গুদাম শ্রমিক নেতা মাইনুদ্দিন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।  পুলিশ তাকে আটকের চেষ্টা করছে।

পুলিশ এসব বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে। পুলিশের ধারণা স্ত্রীর পরিকল্পনায় এ ঘটনা ঘটেছে। স্ত্রীর সাথে অন্য কারো সম্পর্কের বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা। তাই তার মোবাইল ফোনে খুনের দিন এবং এর দুইদিন আগে পর্যন্ত কাদের সাথে বেশি কথা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

.

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আবু তাহেরের স্ত্রী হাছিনা আক্তার একেকবার একেকরকম কথা বলছেন। অন্য কারো সহযোগিতায় আবু তাহেরকে খুন করা হয়েছে এবং তখন মেয়ে ফাতেমা দেখে ফেলায় তাকেও খুন করা হয় বলে ধারণা পুলিশের।

সিএমপির বন্দর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবেই এটি হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হয়েছি। পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।  তবে এর সাথে বাইরের কেউ জড়িত কিনা তা তদন্ত করছি।  জিজ্ঞাসাবাদে হাছিনা আক্তার ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছে তা আমরা অন্যদের সাথে মিলিয়ে দেখছি।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, নিমতলা এলাকায় স্থানীয় বুচুইক্যা কলোনির জনৈক শাহআলমের মালিকানাধীন ভবনের একটি ঘর থেকে বাবা ও মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় রক্তমাখা ছোরা পাওয়া গেছে।  তিনি বলেন, ৩ তলা ঐ ভবনের নিচ তলায় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়ায় থাকতেন আবু তাহের।  তিনি দিন মজুরের কাজ করতেন।

পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই এ জোড়া খুনের ঘটনা বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সাথে আরো কেউ আছে কিনা তা তদন্তে উঠে আসবে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের সাথে সিআইডির ফরেনসিক টিম, ডিবি ও পিবিআই যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত করছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে আবু তাহেরের ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন।

*চট্টগ্রামে বাসা থেকে বাবা-মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print