
পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রামগ্রাম মহানগরীতে হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ার কারণে সকাল থেকে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে নগরীর প্রায় সব সড়কের গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে বাস মালিক ও শ্রমিকরা।
গতকাল মোবাইল কোর্টে বাস মালিক চালক ও সহকারীকে সাজা দেয়ার প্রতিবাদে আর্কস্মিক এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে জানাগেছে। এতে করে জনজীবনে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেছেন, এটা কোনো সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নয়, মালিকরা নিজেদের গাড়ি বের করতে দেয়নি। যার কারণে এ ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে নগরীর সড়কগুলোতে বাস চলাচল না করলেও হাতে গোনা কয়েকটি টেম্পু চলাচল করতে দেখা গেছে। যার কারণে সকাল থেকে ভোগান্তিতে পড়েছে অফিস, স্কুল-কলেজগামীসহ বিশাল একটি জনগোষ্ঠী। অনেকে পায়ে হেঁটে বা রিকশা নিয়ে নিজ গন্তব্যে পৌঁছেছে।
সকাল থেকে নগরীর প্রতিটি এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় অফিসগামী লোকজন ও স্কুল কলেজগামী শিক্ষাথীদের। বাস না পেয়ে অনেকে সিএনজি ও টেম্পুতে যেতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। পর্যাপ্ত গাড়ী না থাকা ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে এ ভোগান্তি দেখা দেয়।

জানাগেছে, গতকাল রবিবার নগরীর ১০নম্বর রুটের চট্টমেট্রো জ ১১-০৪১১ নম্বরের একটি বাস কালুরঘাট পর্যন্ত না গিয়ে চান্দগাঁও থানার সামনে থেকে ঘুরিয়ে দেয়। নির্দিষ্ট এলাকায় না যাওয়ার কারণে বহদ্দারহাট মোড় থেকে বাসটি আটক করে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আটক করার পর দেখা যায়, রাস্তায় চলাচলের অযোগ্য ফিটনেসবিহীন বাসটির মালিককে ডেকে এনে চালক-মালিকের বিরুদ্ধে সাজা দেন আদালত।
বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মনজুরুল হক জানান, বাসটির মালিককে মোবাইল কোর্টে হাজির করে এরকম ঝুঁকিপূর্ণ বাস রাস্তায় কেন নামানো হয়েছে জিজ্ঞাসা করা হলে মালিক ও চালক কেউই সদোত্তর দিতে পারেননি। ফলে ফিটনেসবিহীন বাস রাস্তায় চালিয়ে ও চালাতে দিয়ে যাত্রীদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলার অপরাধে বাসের মালিক মো. মনির হোসেনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে এবং চালক মো. শামীম উদ্দিন ও হেলপার মো. আলমগীরকে ১ মাস করে কারাদণ্ড দেয়।
এদিকে আদালতের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হয়ে নগরীর বাস মালিক ও শ্রমিকরা আজ সকাল থেকে কোনো প্রকার বাস নামতে দেয়নি। মালিক বা শ্রমিক সংগঠনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ সিদ্ধান্ত তারা নেয়। যার কারণে সকাল থেকে কোনো বাস বের করতে পারেনি চালকেরা।
চট্টগ্রাম সড়ক মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, এ ধর্মঘটের বিষয়ে আমরা জানি না। এটা মালিকরা নিজেরা-নিজেরা করেছে। আমরা চেষ্টা করছি বিকালের আগে বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে। মালিকদের সাথে আলাপ করে আমরা এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাবো।