
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কর্তৃক নির্মিত ৩টি ফ্লাইওভার ও ১টি ওভারপাস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আজ রবিবার বিকেলে নগরীর টাইগারপাসস্থ চসিক সম্মেলন কক্ষে এ হস্তান্তর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রকল্প পরিচালক) মো. মাহফুজুর রহমান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এস্টেট অফিসার এখলাছুর রহমানের কাছে ফ্লাইওভারসমূহ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
এ সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ উপস্থিত ছিলেন।
হস্তান্তরিত ফ্লাইওভারসমূহের মধ্যে লালখান বাজার হতে বহদ্দারহাট পর্যন্ত আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার, বহদ্দারহাট জংশনের এম এ মান্নান ফ্লাইওভার, কদমতলী জংশনের ফ্লাইওভার, দেওয়ানহাট জংশনের ওভারপাস রয়েছে।
এ ফ্লাইওভারগুলো নির্মাণ করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্র্তপক্ষের ব্যয় হয়েছে ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার ২০১৫ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০১৮ সাল, ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বহদ্দারহাট জংশনের এম এ মান্নান ফ্লাইওভার নির্মাণ ২০১০ সালে শুরু হয়ে ২০১৩ সাল, ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে কদমতলী জংশনের ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ ২০১২ শুরু হয়ে ২০১৫ সাল এবং ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে দেওয়ানহাট জংশনের ওভারপাস নির্মাণ কাজ ২০১২ শুরু হয়ে ২০১৪ সালে শেষ হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র বলেন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের আলোকে এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এ সিদ্ধান্তের আলোকে সংযুক্ত নকশা অনুযায়ী চউক কর্তৃক সমাপ্তকৃত লালখান বাজার হতে বহদ্দারহাট পর্যন্ত আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার, বহদ্দারহাট জংশনের এম এ মান্নান ফ্লাইওভার, কদমতলী জংশনের ফ্লাইওভার, দেওয়ানহাট জংশনের ওভারপাস প্রকল্পের আওতায় নির্মিত রাস্তা, ফুটপাত, ড্রেইন, সৌন্দর্যবর্ধন কাজ, ফ্লাইওভারের অবকাঠামো ও বৈদ্যুতিক কাজ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৮ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নিকট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের নিমিত্তে হস্তান্তর করা হয়। বর্ণিত ফ্লাইওভার, ওভারপাস, ফুটওভার ব্রীজ, রাস্তা, ফুটপাত, ড্রেইন, সৌন্দর্যবর্ধন কাজ, বৈদ্যুতিক কাজসহ অন্যান্য অবকাঠামো ইত্যাদি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর প্রতিনিধির সমন্বয়ে যৌথ সার্ভে করা হয়। যৌথ সার্ভের প্রেক্ষিতে যে সকল মেরামত কাজ করার প্রয়োজন ছিল তা চউক এর প্রতিনিধিকে এক কপি সরবরাহ করে জানানো হয়। কিন্তু মেরামত কাজগুলো করা হয়নি। বর্তমানে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় ফ্লাইওভার, ওভারপাস, ফুটওভার ব্রীজ, রাস্তা ফুটপাত, ড্রেইন, সৌন্দর্য্যবর্ধন কাজ, বৈদ্যুতিক কাজসহ অন্যান্য অবকাঠামো ইত্যাদির দায়িত্ব আজ ১ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের।
মেয়র বলেন, ফ্লাইওভার ও ওভারপাসে যে সমস্ত সমস্যাগুলো আছে তা দ্রুত সমাধানে চসিক কাজ শুরু করবে। তিনি বলেন, আমাদের আর্থিক ও জনবলের সীমাবদ্ধতা আছে। জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার জন্য মেয়র গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সিডিএ’র চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, সিডিএ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি উন্নয়ন সংস্থা। ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৩ বছর। আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর নির্মিত ফ্লাইওভারগুলো চসিকের নিকট দ্রুত হস্তান্তরের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহন করি। মন্ত্রাণালয়ের অনুমোদনক্রমে যা আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরিত হলো ফ্লাইওভারসমূহ। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে চসিক ও চউকের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন রচিত হলো।
অনুষ্ঠানে চসিক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফরোজা কালাম, দৈনিক চট্টগ্রাম মঞ্চের সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমেদ, সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চসিক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু ছালেহ, ঝুলন কান্তি দাশ, নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব কুমার দাশসহ কর্পোরেশণের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।