
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়াম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা অংশ গ্রহণ করেছিলাম। বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল। সরকার যদি মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে রাজাকারের তালিকা করতো তা হলে কোনো ধরনের অভিযোগ থাকতো না। এই রাজাকারের তালিকা সরকারের ষড়যন্ত্রের অংশ এবং সরকারের মনগড়া।
তিনি আজ ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদে্যোগে নগরীর কাজীর দেউরী মোড়ে বিজয় দিবসের র্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন।

সমাবেশে নোমান বলেন, প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলেও মানবিক হবে, এটা আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু এটা হয়নি। নির্বাচন যেমন ৩০ তারিখের টা ২৯ তারিখ হয়ে গেছে। আজকে বিজয় দিবসও ১৬ তারিখের পরিবর্তে ১৭ তারিখে পালন করতে হচ্ছে আমাদের। এটা আমাদের নয়, জাতীয় লজ্জার বিষয়। বিএনপিকে যথা সময়ে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান পালন করতে দিচ্ছে না এ সরকার। আজকে যদি বিজয় দিবসের র্যালি বিজয় দিবসের দিন করার অনুমতি দিতেন, তাহলে সকলের সাথে বিজয় দিবসের আনন্দ ভাগাভাগি করা যেতো। বিজয় দিবস কোন একক দলের নয়।
তিনি আরো বলেন, বিএনপিকে মিছিল করার অনুমতি প্রদান করে না প্রশাসন। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে এমন কি এরশাদ সরকারের আমলেও প্রশাসন বাস্তব ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। এখন এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না তারা। আমাদের মিছিলে পুলিশের হুমকি ধমকি দেখি। আমাদের সময় দেয়া হয় মাত্র ৫ মিনিট। ৫ মিনিটে কি একটা বিজয় মিছিল করা যায়? তিনি বলেন, প্রথম বাংলাদেশ গান গাইতে শহীদ জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। শেষ বাংলাদেশ বলতে বলতে আমাদের সামনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শাহাদত বরণ করেছেন। তার আদর্শেআমরা উজ্জ্বীবিত। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তিনি যতদিন মুক্ত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলতে থাকবে। দেশনেত্রীকে জেলে রেখে দেশের সংকট দূর হবে না। তাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লড়াই করছি। আমাদের নেতাকর্মীরা সুশৃংখলভাবে এখন সে লড়াইয়ে অবতীর্ণ। ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদের হবেই।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় সমাবেশে ডা. শাহাদাত বলেন, মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় দিশেহারা জাতি মুক্তিযুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছিলো। আজকের এই বিজয় মিছিল প্রমাণ করেছে চট্টগ্রামের মাটি শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার ঘাঁটি। বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। বিজয়’র এই দিনে আজকে আমাদের শপথ নিতে হবে দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।
কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, বিনা ভোটের নির্বাচনে নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করে পেশীশক্তির জোরে দেশ চালাতে গিয়ে সরকার সম্পূর্ণ হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। তারা নিশ্চিত হয়ে গেছে যে, শাসনক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে জনগণের সমর্থন বা ভোটের প্রয়োজন নেই। আর এ কারণেই দেশ পরিচালনায় অবৈধ সরকারের নির্মম আচরণ দেশকে গভীর সংকটে ফেলেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষকের হাতে গড়া দল। এই দলকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। মিছিল মিটিং বন্ধ করে বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না। আওয়ামীলীগ যদি লালদীঘির মাঠে সমাবেশ করতে পারে তাহলে বিএনপি কেন পারবে না? আগামীতে আমরা লালদীঘির মাঠে সমাবেশ করতে চায়। আশাকরি সরকার জনগণের মনের ভাষা বুঝে বিএনপিকে লালদীঘির মাঠে সমাবেশ করতে সহযোগিতা করবে।
র্যালী ও সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, মহিলা দলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফাতেমা বাদশা, সি: যুগ্ম সম্পাদক ছকিনা বেগম, স্বেচ্ছাসেবকদলের সি: সহসভাপতি তফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মৎস্যজীবি দলের আহবায়ক হাজী নুরুল হক, সদস্যসচিব এড. আবদুল আজিজ, শ্রমিক দলের সভাপতি তাহের আহমেদ, নগরীর ১৫ টি থানা ও ৪৩ টি ওয়ার্ড ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে অংশ গ্রহণ করেন।
র্যালী ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সামশুল আলম, এড. আবদুস সাত্তার, হাজী মোহাম্মদ আলী, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, এস এম আবু ফয়েজ, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, জাহাঙ্গির আলম দুলাল, আনোয়ার হোসেন লিপু, শাহেদ বক্স, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, কামরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন মুবিন প্রমুখ।