চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আবু সুফিয়ানের ধানের শীষের পক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করের নেতৃত্বে নগরীর বহদ্দারহাট থেকে শুরু হয়ে সিএন্ডবি, বাহির সিগন্যাল, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, কামালবাজার ও মৌলভী বাজার এলাকায় পথসভা ও গণসংযোগ করেছেন।
২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে এলাকার পাড়া-মহল্লার ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। এতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ, দলীয় নেতাকর্মী ও হাজার হাজার সর্বস্তরের জনসাধারণ নেতৃবৃন্দের সাথে ধানের শীষের গণসংযোগে অংশ নেন। তারা এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। নেতাকর্মীরা এলাকার সাধারণ জনগণের মাঝে ধানের শীষে ভোট চেয়ে প্রচারপত্র বিলি করেন।
এসময় সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনে ধানের শীষে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ১৩ জানুয়ারী সুষ্ঠু ভোট হলে আবু সুফিয়ান বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। বিগত নির্বাচনের মত এবার আগের রাতে ভোট নেয়ার সুযোগ নেই। সেজন্য সকলকে ফজরের নামাজের পর থেকে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে। কেন্দ্রে কোন অনিয়ম দেখলেই আওয়াজ তুলবেন। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব। ভোট কেন্দ্রে শক্তভাবে পাহারা বসাবেন যাতে লুটেরেরা ভোট ডাকাতি করতে না পারে। ১৩ জানয়ারী সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আবু সুফিয়ানকে ধানেরশীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, বিগত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন ছিল ইতিহাসের একটি কলংকজনক অধ্যয়। প্রহসনের এই নির্বাচন ছিল অনিয়মের খনি। এই নির্বাচন নিয়ে জনগণ বিরক্ত। এরপরও বিএনপি গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলেই মানুষ জানতে পারছে সরকার কিভাবে ভোট চুরি করে তাদের অধিকার হরণ করছে। এই উপনির্বাচনের ফলাফলে কোন সরকারের পরিবর্তন হবে না। তাই আমরা আশা করবো নির্বাচন কমিশন উৎসব মুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।
এসময় বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের অবিরাম সংগ্রামের অংশ হিসেবেই এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। সিটি মেয়র ও সরকার দলীয় সংসদরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনী আচরণ বিধি লংগন করেছেন। তারা আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সভা সমাবেশে উপস্থিত হয়ে নৌকার পক্ষে পেশী শক্তির মাধ্যমে কেন্দ্র দখলের ষড়যন্ত্র করছেন। যা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সাংসদ নদভীর কেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতীর নির্দেশনার পর আদৌ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি না আমরা সন্দিহান। সাংসদের কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের নীল নকশা সহকর্মীদের অবহিত করার ঘটনা নির্বাচনী আচরণ বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শনের সামিল। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন স্থানে রঙিন কাপড় দিয়ে আস্ত নৌকা এবং নানা রঙের নৌকা প্রতীকের তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো সম্পূর্ণ নির্বাচন আইনের পরিপন্থী। আমি নির্বাচন আইন ভঙ্গ করার বিষয়টি কমিশনকে জানিয়ে প্রতিকার চেয়েছি। আমার প্রত্যাশা ১৩ জানুয়ারী একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হউক। আমরা সবাই যেন আইন মেনে চলি। একটি ভাল নির্বাচন উপহার দিই।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের মানুষ অপেক্ষা করছে সুষ্ঠু পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে ধানের শীষ প্রতীককে জয়ী করে বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য। বিগত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ব্যালট পেপার চুরি করে দিনের ভোট রাতে নিয়েছিল। আওয়ামীলীগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিশ^াস করে না। এবারও তারা ইভিএম মেশিনে ভোট চুরি করে জয়ী হওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা এই ষড়যন্ত্র কখনো সফল হতে দিবে না। তিনি যোগ্য প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে ধানের শীষ প্রতীকে জয়ী করতে নেতাকর্মীদের প্রতি অক্লান্ত পরিশ্রম করার আহবান জানান।
গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি মাহবুবুল আলম, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আনোয়ার হোসেন লিপু, শাহেদ বক্স, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য মনজুর উদ্দিন চৌধুরী, বদরুল খায়ের চৌধুরী, নগর বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সহ দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী, বায়েজিদ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জসিম, চান্দগাঁও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. ইলিয়াছ চৌধুরী, মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জানে আলম জিকু, বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, হাজী আবুল বশর, দিদারুল আলম হিরামন, মো. নাছির উদ্দিন, মো. ওসমান গণি, মো. হাসান, ফজলুল করিম, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম তালুকদার, মহিলাদল নেত্রী রেজিয়া বেগম মুন্নি, শাহেদা বেগম, আফরোজা বেগম জলি, নগর যুবদলের ম. হামিদ, মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন মানিক, গুলজার হোসেন, নুরুল আমিন, আরিফুল ইসলাম, সাঈদুল ইসলাম, জাবেদুল আলম, ছাত্রদলের মো. ইলিয়াছ, মো. মনছুর প্রমুখ।
