সাইফুল ইসলাম শিল্পী, চট্টগ্রামঃ
এটিএম বুথে কার্ড পাঞ্চ করলে এবার আর টাকা নয়, বেরিয়ে আসবে বিশুদ্ধ খোলা পানি। কম দামে সহজে ওয়াসার পানি পেতে এমন আধুনিক সিষ্টেমস চালু করা হয়েছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে।
চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে পানি কিনে নিয়ে সে পানি অত্যাধিক বিশুদ্ধ করে তা জনগণের কাছে কার্ডের মাধ্যমে বিক্রি করবে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান “ড্রিংক অয়েল”।
আগামী পহেলা জানুয়ারী-২০২০ ইং পরিক্ষামূলক এই আধুনিক পদ্ধতিতে পানি বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। এ জন্য নগরীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত খুলশীতে স্থাপন করা হয়েছে একটি বুথ। এখান থেকে যে কেউ ৬০ পয়সা প্রতিলিটার পানি কিনতে পারবে কার্ড পাঞ্চের মাধ্যমে।
ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে জানাগেছে, একটি বুথ দিয়ে কার্ড সিস্টেমে পানি বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হলেও মূলত এক বছরের মধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০০টি বুথ স্থাপন করে নগরবাসীর পানি কেনার ব্যবস্থা করা হবে।
ব্যাংকের এটিএম বুথের মতোই কাউন্টার থেকে কার্ড পাঞ্চের মাধ্যমে পানি বিক্রি করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রতি লিটার ৬০ পয়সা মূল্যে আপাতত খুলশীতে একটি বুথের মাধ্যমে ১ জানুয়ারি থেকে অত্যাধুনিক এ ব্যবস্থায় পানি বিক্রি করা হবে। ২০২০ সালে ১০০ পয়েন্টে স্থাপন করা হবে পানির এটিএম বুথ।
পরীক্ষামূলকভাবে ওয়াসার প্রধান কার্যালয়ের সামনে, আগ্রাবাদ ওয়াসা অফিসের সামনে এবং বহদ্দারহাটে (ওয়াসা বোস্টারের সামনে) বুথ স্থাপন করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, আমেরিকাসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতি পানি বিক্রি করা হচ্ছে বাংলাদেশে আমরাই চট্টগ্রামে কার্ডের মাধ্যমে পানি বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছি।
ওয়াসার সহযোগিতায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান ড্রিংকিং ওয়েল ওয়াটার এটিএম নামের পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, এটিএম বুথের জন্য জায়গা দিচ্ছি আমরা। এছাড়া পানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহও করবে ওয়াসা। বাণিজ্যিক হারে ড্রিংকিং ওয়েল ওয়াটার কোম্পানির কাছে পানি বিক্রি করা হবে। বিদ্যুৎ ও মেনটেইনেন্সসহ বিবিধ খরচ বহন করবে কোম্পানিটি।
সূত্র মতে, পানির এই এপিএম বুথটি দেখতে হুবহু ব্যাংকের এটিএম বুথের মত। সাজ-সজ্জাও অনেকটা সে রকম। তবে ব্যাংকের বুথে টাকা বের হয়ে আসলেও এখানে নির্ধারিত কার্ড পাঞ্চ করার পর পাইপ দিয়ে বের হয়ে আসবে বিশুদ্ধ পানি। কার্ড তুলে নিলে পানিও বন্ধ হয়ে যাবে। বিশাল বুথটির পিছনের অংশে পানি বিশুদ্ধ করণের যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ড্রিঙ্ক অয়েলের এরিয়া ম্যানেজার মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম জানান, ওয়াসা থেকে সরবরাহ করা পানি যতটা পরিস্কার এবং বিশুদ্ধ তার চেয়ে তিনগুণ বিশুদ্ধ করে সাদা পানি বুথ থেকে পাওয়া যাবে।
তিনি আরো বলেন, বুথে কোম্পানির প্রতিনিধির কাছে এটিএম কার্ড পাওয়া যাবে। রির্চাজেবল এই কার্ড দিয়ে সারাক্ষণ পাওয়া যাবে পানি। ব্যাংকের এটিএম কার্ডের মতো এই কার্ডেও থাকবে পাসওয়ার্ড। গ্রাহকরা দুই কপি ছবি ও একটি আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে যে কেউ বুথ থেকে ২০০ টাকা দিয়ে এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে ৫০ থেকে যেকোনো পরিমাণ টাকা রিচার্জ করা যাবে।
