খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির রামগড় থেকে অপহরণের ১২ ঘন্টার মাথায় মুক্তি পেয়েছেন তিন ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আড়াই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে এসেছেন।
জানাগেছে, গতকাল (২৫ অক্টোবর) মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে তাদের অপহরণ করা হয়। পরে একই দিন রাত ৮টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তিলাভের পর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়া তিন ব্যবসায়ী আবুল খায়ের (৫২), তার ছোট ভাই মো. শাহজাহান (৪৫) ও মো: মোস্তফা (৩৫)কে রামগড় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা তিন জনই রামগড় পৌরসভার শশ্মানটিলা ও বল্টুরাম টিলা এলাকার বাসিন্দা এবং বাঁশ ও কলা ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ী মো: শাহজাহান জানান, তিনি প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ব্যবসার কাজে রামগড়ের পিলাকছড়া এলাকায় গেলে সেনাবাহিনীর পোশাকধারী সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসী তাকে অস্ত্রের মুখে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর আবুল খায়ের ও মোস্তফাকে তারা পার্শ্ববর্তী জঙ্গলের ভিতর নিয়ে আসে। পরে তিনজনকে ৭-৮ কিলোমিটার পায়ে হাঁটিয়ে গহীন জঙ্গল ঘেরা একটি টিলার উপর নিয়ে হাত ও চোখ বেঁধে আটকে রাখে।
অপহরণকারীরা তাদের কাছে আট লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। দরকষাকষির মাধ্যমে দুই লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় মুক্তি দিতে রাজী হয় তারা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে গহীন ঐ জঙ্গলে মুক্তিপণের আড়াই লক্ষ টাকা পৌঁছে দেয়ার পর তিনজনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
রামগড় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অপহৃত আবুল খায়ের জানান, সন্ত্রাসীরা সংখ্যায় ৩০-৩৫ জন ছিল এবং সকলেই সেনাবাহিনীর মত পোশাক পড়া ছিল। গভীর জঙ্গলের ভিতরে নিয়ে তাদের আটকে রেখে সন্ত্রাসীরা সেখানে একটি বড় গর্ত খুঁড়ে। তাদের তিনজনকে হাত বেঁধে ঐ গর্তের ভিতরে ফেলে গুলি করে হত্যার ভয়ভীতি দেখায়।
মো: মোস্তফা জানান, হিরণ ত্রিপুরা নামে স্থানীয় এক সাবেক ইউপি মেম্বার সন্ত্রাসীদের হাত পা ধরে তিন ব্যবসায়ীর ভিক্ষা চায়। সন্ধ্যার পর লোক মারফত মুক্তিপণের আড়াই লক্ষ টাকা পোঁছানোর সন্ত্রাসীরা তাদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
মুক্তির পর তিন ব্যবসায়ীকে অসুস্থ অবস্থায় রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জেএসএস (সংস্কার)এর সন্ত্রাসীরাই এ অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় করেছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে।। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে