
সাইকেল ফেরত দেয়ার কথা বলে এক গার্মেন্টস শ্রমিককে বাকলিয়া থেকে চকবাজার থানা এলাকায় কৌশলে ডেকে নিয়ে আটক রেখে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা অভিযোগে মো. লিটন নামে একজনকে গ্রেফতার এবং ভিকটিম কৃষ্ণ সরকার (১৭)কে উদ্ধার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (৮ডিসেম্বর) বাকলিয়া থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করে।
আটক মো. লিটন কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট থানা এলাকার মো. আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি বাকলিয়া থানার শান্তিনগরের বগারবিল এলাকায় বসবাস করতেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওসি বাকলিয়া নেজাম উদ্দিন পাঠক ডট নিউজকে জানায়, কোতোয়ালী থানাধীন এ্যাপল গার্মেন্টসে মার্কার সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন কৃষ্ণ সরকার (১৭) । বাকলিয়া থানাধীন রাহাত্তার মাজার গেইট হাজী মফজল সওদাগরের বিল্ডিংয়ে কৃষ্ণ সরকার, তার বোন মনি সরকার (২৩) এর বাসায় থেকে চাকরীতে আসা যাওয়া করত। গত অক্টোবর মাসে তার বোন ও ভগ্নিপতি বাসা ছেড়ে দেওয়াতে কৃষ্ণ ব্যাচেলর হিসেবে চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দার হাট কাঁচা বাজার রোডে তার বন্ধু ইমন এর বাসায় উঠেন। চাকরীতে আসা যাওয়ার কাজে ব্যবহৃত তার বাই সাইকেলটি দুইদিন যাবৎ খুঁজে না পাওয়ায় কৃষ্ণ চা্করীতে যেতে দেরি হওয়ায় গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ চাকরীতে যেতে নিষেধ করেন। পরবর্তীতে কৃষ্ণ বাই সাইকেলটি বহদ্দার হাট কাঁচা বাজার এলাকায় একটি ছেলেকে চালাতে দেখলে সাইকেলটি সনাক্ত করলে ছেলেটি কৃষ্ণকে তার সাইকেল দিয়ে দেয়। গার্মেন্টসে কৃষ্ণর চাকরী চলে যাওয়াতে গত ৩০ নভেম্বর তিনি বাড়ীতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং তার সাইকেলটি আসামী কৃষ্ণর সহকর্মী মোঃ লিটন (২৬) তার কাছে রেখে যেতে বলে ও পরের দিন কৃষ্ণকে সাইকেলটি দিয়ে দিবে বলে আশস্ত করলে তিনি সাইকেলটি মোঃ লিটন (২৬) নিকট রাখেন। পরের দিন ১ ডিসেম্বর সাইকেল নিয়ে যাওয়ার জন্য আসলে আসামী লিটন কৃষ্ণকে সাইকেল নেওয়ার জন্য ৭ ডিসেম্বর আসতে বলে। কৃষ্ণ আসামী লিটনকে মোবাইল করলে সে কৃষ্ণকে বাকলিয়া এক্সেস রোড আসতে বলে। সে মোতাবেক কৃষ্ণ ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাকলিয়া থানাধীন এক্সেস রোডের মুখে রাস্তার উপর পৌঁছলে আসামী মোঃ লিটন (২৬) কৃষ্ণকে সাইকেল দেওয়ার নাম করে কৌশলে চকবাজার থানাধীন বদি আলমের খামার বাড়ীতে নিয়া আটক করে রাখে। সেখানে আসামি লিটনের আরও দুই সহযোগীকে দেখতে পান।
আসামীরা এখানে কৃষ্ণকে কিল, ঘুষি মারে ধারালো ছোরা প্রদর্শন করে কৃষ্ণকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে করিয়া তার মোবাইল নম্বর হতে বাদীর বড় বোন মনি সরকার (২৩) এর মোবাইল নম্বরে ফোন করে মুক্তিপন হিসেবে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলে। কৃষ্ণর বড় বোন তার ছোট ভাই কৃষ্ণর জীবনের কথা চিন্তা করে আসামীদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ২ হাজার টাকা পাঠায় করে।
এতেও আসামিরা সন্তুষ্ট না হয়ে বাকী টাকা দেওয়ার জন্য ক্রমাগত কৃষ্ণর বোনকে কল করতে থাকে। কৃষ্ণর বোন উপায়ন্তুর না দেখে বাকলিয়া থানার ওসিকে সব ঘটনা খুলে বললে তিনি কৌশলে বাদীর বোনের মাধ্যমে আসামীদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে তাদের অবস্থান সনাক্ত করে বাকলিয়া থানার টহল পুলিশকে ঘটনাস্থলে প্রেরণ করলে আসামীরা দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসামী লিটনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ওসি আরও জানান, এসময় ভিকটিম কৃষ্ণকে ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করেন। এই ঘটনায় ভিক্টিম কৃষ্ণ (১৭) বাদি হয়ে এজাহার দায়ের করলে পরবর্তিতে অভিযান পরিচালনা করে কৃষ্ণর ব্যবহৃত বাইসাইকেলটি উদ্ধার করেন। পলাতক অপর দুই আসামিকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।