
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কার্যালয় “নাসিমন ভবনে” হামলা চালিয়ে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও কঁচের বোতল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণ এবং গাড়ী ভাঙচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। এসময় বিএনপি ছাত্রদলের ৭/৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। হামলার জন্য বিএনপি যুবলীগ ছাত্রলীগকে দায়ী করে বলেছে হামলার সময় জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী নাসিমন ভবনে ডুকে পড়ে।
গতকাল বুধবার (২০ জানুয়ারী) মধ্যরাতে এ হামলা ঘটনা ঘটে। পরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ র্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।
হামলাকালে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় নগরীর নূর আহমদ সড়কের যানবাহন চলাচল ২ ঘন্টা বন্ধ ছিল। নিজ কার্যালয়ে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আটকা পড়েন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডাক্তার শাহাদাতসহ শত শত নেতাকর্মী।
বিএনপির নেতারা জানান, রাত সাড়ে ১০টার কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে প্রথমে নাসিমন ভবনের সামনে রাস্তার উপর ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় বিএনপি অফিসে সিনিয়র নেতারাসহ কয়েকশ নেতাকর্মী অবস্থান করছিল। ককটেল বিস্ফোরণের পরপরই নেতার্মীরা রাস্তায় রেরিয়ে দৃর্বৃত্তদের ধাওয়া করে।

এ ঘটনার প্রায় ১ঘন্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে এসে নাসিমন ভবনে ঢুকে ব্যাপক তান্ডব লীলা চালায়। দলীয় কার্যালয়ের সামনে থাকা বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের পাজেরো গাড়ী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের প্রাইভেট কারসহ অন্ত ৫টি গাড়ী ভাঙচুর চালায়। অতর্কিত এ হামলার ঘটনায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির সেক্রেটারি আবুল হাশেম বক্করসহ নেতককর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
নগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইদ্রীস আলী বলেন, ‘আমাদের মেয়র প্রার্থীসহ আমরা পার্টি অফিসে অবস্থান করছিলাম। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের একটি মিছিল হঠাৎ পার্টি অফিসের সামনে এসে ককটেল ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। শাহাদাত ভাইয়ের গাড়িসহ ভাঙচুর চালিয়েছে। আমরা অবরুদ্ধ হয়ে আছি।’ রাত সোয়া ১১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করে।
হামলার ভিডিও দেখুন-
কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা শুনেছি জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাস সুমনের নেতৃত্বে একটি মিছিল নসিমন ভবন ক্রস করার সময় ভবনের ভেতর থেকে ককটেল ও ইট মারা হয়েছে। এরপর আওয়ামী লীগের মিছিল থেকেও পাল্টা ইট মারা হয়। দুপক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। সবার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে দেখছি।’

রাত ১২টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে থাকা ডা. শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এ ভাবে দলীয় কার্যালয়ে এসে যুবলীগ ছাত্রলীগের ছেলেরা মামলা করছে। নির্বাচনের পরিবেশকে তারা অশান্ত করে তুলছে। তিনি বলেন কোন কারণ ছাড়াই এ হামলা করা হয়েছে। ধানের শীষের বিজয় তারা আঁচ করতে পেরে এভাবে হামলা মামলা শুরু করে দিয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহাদাত বলেন,‘এইটা আমাদেরই এলাকা। আমরা কেন পোস্টার ছিড়বো? আমার ঘরের সামনে নৌকার পোষ্টার লাগানো আছে না? কেউ পোস্টার ছিঁড়েছে? বরং তারা আমাদের পোস্টার ছিড়েছে। আমার বাসার সামনে সব ইন্টেক পোস্টার লাগানো আছে। আমরা তো সহনশীল, তারা স্বীকার করেছে যে পোস্টার ছিড়েছি তাই হামলা করেছে। আমরা তো সুন্দর রাজনীতি করি।’
এদিকে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর রাত ১টার দিকে মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত, আবুল হাসেম বক্কর, কেন্দ্রিয় বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল, আবু সুফিয়ানসহ নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয় ছেড়ে যান।