
আব্দুল্লাহ আল জামিল :
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে মূলত প্রশাসনের রোষারলে পড়েন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।
সম্প্রতি একটি মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় একমাস কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে ডা. শাহাদাত হোসেন এমনটি দাবী করেছেন পাঠক ডট নিউজের কাছে। তিনি বলেন, আমাদের বিএনপির কর্মী ডা.লুসিকে আমার বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রশাসনের একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে আমার নামে এক কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছে। যার কোন ভিত্তি নেই। তা আদালতে অবশ্যই মিথ্যা প্রমাণ হবে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে,মোজাফফর আহম্মদ দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে চন্দনাইশে একটি জায়গা ক্রয় করেন।সেই জায়গাটির পাওয়ার দেওয়া হয় তার স্ত্রী ফাতেমা জোহরাকে। ফাতেমা জোহরা জায়গাটি এক কোটি টাকার চেকের মাধ্যমে লুসির সচিব মহিউদ্দিনের সাথে বায়না করেন। মহিউদ্দিন ফাতেমা জোহরাকে যে একাউন্টের চেক দিয়ে ছিলেন সেই একাউন্টে কোন টাকা না থাকায় মহিউদ্দিনের সাথে ফাতেমা জোহরার সম্পর্ক অবনতি হয়। এমন সময় মোজাফফর দেশে এসে বিষয়টি সমাধান করার জন্য মহিউদ্দিনের কাছে যান। মহিউদ্দিন মোজাফফর আহম্মদকে বলেন.আপনি আপনার স্ত্রীর পাওয়ার ফিরিয়ে নিন। আমি জমি ক্রয় বাবাদ দেড় কোটি টাকা দিবো।তার কথায় সরল বিশ্বাসে মোজাফফর তার স্ত্রীর পাওয়ার ফিরিয়ে নিয়ে দেড় কোটি টাকার চেকের বিনিময়ে মহিউদ্দিনকে জায়গাটি রেজিস্ট্রি করে দিয়ে দেন। পরবর্তীতে সেই চেক ডিজঅনার হলে অনেক ঘুরাঘুরি দেন দরবার করে মোজাফ্ফর তার টাকা না পেয়ে যখন বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তখন তারা পূর্বপরিচিত ডা: শাহাদাতের নিকট যান সহযোগিতার জন্য। তখনই ডা: শাহাদাত লুসি খানকে ফোন করে বিষয়টি সমাধান করার জন্য বলেন। এবং এই দম্পতির টাকা পরিশোধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। একরানেই মূলত ডা: লুসি খান ডা: শাহাদাতসহ এই দম্পতিকে চাঁদাবাজী ও অপহরণ মামলায় জড়িয়ে দেন।
এ বিষয়ে ডা. শাহাদাত বলেন, আমি কেন লুসির কাছে চাঁদা চাইবো..? একথা আবার শক্রুদের কেউ বিশ্বাস করবে না। লুসি চেয়েছিল তার সচিবের মাধ্যমে অসহায় মোজাফ্ফর পরিবারে শেষ সম্বল তার জায়গাটা আত্মসাৎ করতে সেখানে আমি বাধা হয়ে দাড়ালে সে ২৯ মার্চ আমার নামে চাঁদাবাজির মামলা করেছে। বলেছে আমি লোকজন নিয়ে তার সচিব মহিউদ্দিনকে অপহরণ করেছি এবং অভিযোগে বলেছে, গত ১৬ মার্চ ডা: লুসির বাসায় আমি ৪৭ বছর বয়সী প্রবাসী মোজাফফর আহমেদ ও ৩৭ বছর বয়সী তার স্ত্রী ফাতেমা জোহরাকে পাঠিয়েছি। তারা নাকি তার বাসায় চাঁদা দেওয়ার জন্য তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ গালিগালাজ করে তার বাসায় তাকে জিম্মি করে ৪টি খালি চেকে সাক্ষর করে নিয়ে যায়। ১৬ মার্চের এই ঘটনায় মামলা করেন ২৯ মার্ট। যা হাস্যকর হাস্যকর ও অবান্তর।
ডাক্তার শাহাদাত বলেন, লুসির সাথে আমার এই বিরোধকে কাজে লাগায় প্রশাসন। তিনি অভিযোগ করেন, চসিক নির্বাচনে ভোট কারচুপির মাধ্যমে তার বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে যখন তিনি ইসিসহ নির্বাচনি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ নেন তখনই প্রশাসনের একটি পক্ষ ঢাকা থেকে ফোন করে ইসির বিরুদ্ধে মামলা করতে নিষেধ করেন এবং মামলা করলে তাঁর ক্ষতি হবে মর্মে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেয় বলে ডা. শাহাদাত হোসেন জানান। কিন্তু সে হুমকি প্রত্যাক্ষান করে তিনি আদালতে মামলা করলে আদালত ৩০ মার্চের মধ্যে চসিক নির্বাচনের ইভিএম’ মেশিনে প্রিন্টেড ফলাফল স্বাক্ষরযুক্ত কপি আদালতে উপস্থপনের নির্দেশ দেন।
আরও খবর: চসিক নির্বাচন বাতিল চেয়ে সিইসি, মেয়র ও সচিবের বিরুদ্ধে ডা. শাহাদাতের মামলা
তার একদিন আগেই ২৯ মার্চ পরিকল্পিত ভাবে আমার নামে চকবাজার থানায় এ চাঁদাবাজির মামলা করা হয়। শাহাদাত বলেন, মূলত লুসিকে দিয়ে প্রশাসনের কর্তা এ মামলা কনিয়েছে। তিনি বলেন নিয়ম হচ্ছে থানায় কারো বিরুদ্ধে ফৌজদারী অভিযোগ গেলে আগে তদন্ত করে পুলিশ সত্যতা যাচাই করবে। লুসির অভিযোগ পেয়েই কোন তদন্ত ছাড়াই চকবাজার থানা মামলা নিয়ে নেয়। এতে প্রশাসনের নীল নকশা ধরা পড়ে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডা: লুসি খানকে ফোন করলে তিনি প্রথমে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব পত্রপত্রিকায় লেখা লেখি করছে তাদের সবাইকে আমি দেখে নেব। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো। আমি এসব সাংবাদিকদের জেলের ভাত খাওয়াবো।
পরে অবশ্য ডা. লুসি নিজে ফোন করে প্রতিবেদকের সাথে কথা বলেন। তিনি পাঠক ডট নিউজকে বলেন,সকল টাকা পরিশোধ করেই মোজাফ্ফর দম্পত্তি থেকে জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। আপনারা চন্দনাইশ কোর্টে গিয়ে খবর নিতে পারেন। ডা: শাহাদাত আমার কাছে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে মোজাফফর দম্পতির মাধ্যমে আমার প্রতিষ্ঠানের সচিবকে অপহরণ করেছে।
অপহরণের ৮ দিন পর মামলা করলেন কেন,জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ডা: শাহাদাতের সঙ্গে আপোষ করে মহিউদ্দিনকে ফেরত আনতে চেয়েছিলাম। তাই প্রথমে মামলা করিনি। কারন আমার কাছে মামলার চেয়ে জীবন্ত মহিউদ্দিনকে ফেরত পাওয় দরকার ছিলো।