
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় সারা দেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউনের’ সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় প্রাণ গেছে আরও ৮১ জনের।
আজ বৃহস্পতিবার কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় দেশে কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আলোচনা হয়।
এতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ রোগের বিশেষ ডেল্টা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যেই রোগের প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এই প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ্ব জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ড ভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী, যেসব স্থানে পূর্ণ ‘Shutdown’ প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ঢাকার পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জে লকডাউন ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ফলে এসব এলাকার কোনো গণপরিবহণ ঢাকায় প্রবেশ করতে পারছে না।
গেল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত নিয়মিত করোনা বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেছিলেন, আমরা আপাতত ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাত জেলার সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখছি। যদি সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি এবং ঢাকার পরিস্থিতি নাজুক হয়, তা হলে শুরুতে ঢাকাকে লকডাউনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একদিনে মৃত্যু ৮১ জন:
একদিনে ফের শনাক্ত ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩ হাজার ৮৬৮ জনে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৫৮ জন। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত ৮ লাখ ৭২ হাজার ৯৩৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ২৩০ জন এবং এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৯৪ হাজার ৭৮৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
এতে আরও জানানো হয়, ৫৫৪টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৯৯৪টি নমুনা সংগ্রহ এবং ৩০ হাজার ৩৯১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।