
জেলার বাঁশখালীতে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা বস্তাবন্দী লাশটি চট্টগ্রামে নিখোঁজ প্রাইভেটকার চালক শাহ আলম (৪৫) এর বলে শনাক্ত করেছে তার পরিবার।
প্রাইভেটকার চালক শাহ আলম কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার বাসিন্দা বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ বেপারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) বিকালে বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পুরানঘাট মসজিদের উত্তর পাশে পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী (পিএবি সড়ক) প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে গলায় গামছা মোড়ানো অবস্থায় বস্তাবন্দী একটি লাশ স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে ৯৯৯ ফোন করে। পরে বাঁশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অজ্ঞাতনামা বস্তাবন্দী লাশটি উদ্ধার করেন। পরে সন্ধ্যায় তার পরিচয় মিলে।
পুলিশ জানায়, বস্তাবন্দি লাশটি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার চাঁন মিয়ার পুত্র শাহ আলমের (৪৫)। তিনি পেশায় একজন ভাড়ায় চালিত কার চালক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার পশ্চিম বেপারিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল হক বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের প্রধান সড়কের পুরনো ঘাট ঘর এলাকায় লাশটি দেখে স্থানীয়রা আমাকে ফোন করলে বিষয়টি আমি বাঁশখালী থানাকে অবহিত করি। এবং আমি নিজেও ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করতে সহযোগিতা করি।’
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘লাশের খবর পাওয়া মাত্র রামদাশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরে আমি ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারা সার্কেল মোঃ হুমায়ূন কবির এবং ওসি তদন্ত আজিজুল ইসলামসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাবন্দী লাশটি উদ্ধার করে সুরতাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করি।
এদিকে নিহত শাহ্ আলমের মেয়ে আয়েশা আকতার আশা বলেন, ‘আমার আব্বু গত ২৬ তারিখ সকাল ৭ টায় কোম্পানির ডিউটির জন্য মালিককে নিয়ে পটিয়ায় যান। সারাদিন ওখানে ডিউটিতে ছিলেন। সেদিন বিকেল ৪টার পরে গাড়ির মালিককে কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে নামিয়ে দেন। এটা মালিক নিজেই বলেছেন। কিন্তু আমার বাবার কল লিস্টের সাথে মালিকের কথার কোনো মিল খুঁজে পাইনি। গত ২৭ তারিখ ডবলমুরিং থানায় জিডি করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘মালিক বলতেছে উনি আসতেছে। কিন্তু তখন কল লিস্টে উনি পটিয়ায় লোকেশন। উনার মোবাইলে রিং হয়েছিল। কিন্তু রিসিভ হয়নি। ২৭ তারিখ বিকেল ৫ টায় উনার ফোন থেকে কল আসে কিন্তু কোন কথা বলে না। আম্মু হ্যালো বলার পরে ফোন ৫ মিনিটের মত হোল্ড করে রেখেছিল ওদিক থেকে। এরপরে আবার গতকাল ২৮/১০/২০২১ তারিখে আবার আব্বুর ফোনে কল দিই। একজন লোক রিসিভ করে বলে উনি ঐ ফোনটা নাকি বাঁশখালী, আনোয়ারা রোডে ভোর বেলা পথে হাঁটতে গিয়ে পায়। কিন্তু উনি ফোনের মালিককে(আমার বাবাকে) দেখেন নাই। এরপরে ওখান থেকে কল কেটে দেয়ার পর আর রিসিভ করছেনা।লোকটি ফোন অফ করে দিয়েছে। আমার বাবার লাশ এখন চট্টগ্রাম মেডিকেলে। পোস্ট মর্টেম শেষ হতে ১১টা বাজবে। চট্টগ্রামেই দাফন করবো উনাকে। বদরুদ্দীন নামের এক ব্যক্তির গাড়ি চালাতেন আমার বাবা। উনিই আমার বাবাকে খুন বলে আমার ধারণা। উনার বাড়িও কুমিল্লা দাউদকান্দি। আমার বাবার প্রতি যে এতবড় একটা অন্যায় করা হয়েছে, আমরা এটার বিচার চাই।’