
দেশে প্রতিদিন গড়ে পৌনে তিনশো’ মানুষ মারা যান ক্যান্সারে। দেরিতে শনাক্ত হওয়া এবং চিকিৎসার উচ্চ ব্যয় এমন মৃত্যুর প্রধান কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে বাংলাদেশে প্রতিদিন নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন ৩৩৪ জন। আর মারা যাচ্ছেন প্রায় পৌনে ৩শ জন রোগী। এই মরনব্যধি থেকে বাঁচতে অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন, বাজে খাদ্যাভ্যাসসহ তামাক বর্জনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
৫৪ বছর বয়সী সুলতানা পারভীন, ভুগছেন দুরারোগ্য ক্যান্সারে। দু বছর আগের একটি ছোট্ট টিউমার থেকে ধরা পড়ে, শরীরে বাসা বাঁধে এই মরণরোগ। এরপর গল্পটা যুদ্ধের…..অনিশ্চয়তার।
বৈশ্বিক ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোব ক্যান এর তথ্য বলছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে শনাক্ত হয় দেড় লাখ ক্যান্সার রোগী। এছাড়াও বছরে মারা যান প্রায় ১ লাখ। সে হিসাবে প্রতিদিনের গড় পৌনে তিনশো যা করোনায় মৃত্যুর চেয়ে কয়েকগুন বেশি।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, বাজে খাদ্যাভ্যাস ও তামাক সেবনসহ নানা কারণ রয়েছে ক্যান্সারের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরিতে শনাক্ত হওয়া এবং উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না এই মরণব্যধিকে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন স্তরে ক্যান্সার চিকিৎসায় জনপ্রতি গড় ব্যয় বছরে ১০ লাখ টাকা। এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ বলছেন, এই ব্যয় কমাতে সারাদেশে চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করতে হবে।
যদিও কাগজে-কলমে বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাত্র দুইশো’ জন। এর বাইরে নতুন যুক্ত হয়েছেন আরও দুইশ’।
খোদ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগও মনে করে- সরকারি পর্যায়ে খুব কম চিকিৎসক থাকায় সেবা পেতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন রোগীরা।
গবেষক দলের প্রধান ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ জানান, বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার বিকল্প উৎস থেকে অর্থায়ন করা সংক্রান্ত এ ধরনের প্রথম গবেষণা এটি। ‘কিভাবে খুব সামান্য অর্থনৈতিক অবদান রাখলে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা দেয়া যায়’- আমাদের এই ধারণা প্রয়োগ করে বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগেরও চিকিৎসা করা যাবে বিনামূল্যে অথবা কম মূল্যে। এ জন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ খাদ্যনালির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এরপরের অবস্থানে রয়েছে মুখ গহবর এবং নারীদের স্তনক্যান্সার।