
চট্টগ্রামের হাটহাজারী এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলা পর্যায়ের বিশ্ব ইজতেমা। আগামী ২৯ সেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দিনের এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া গ্রামে।
ইজতেমার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ ইজতেমার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। স্থানীয় ও দুরদুরান্তের লোকজন অংশ নিচ্ছে প্যান্ডেল নির্মাণ কাজে। চারিয়া গ্রামের বিশাল শত একর কৃষি জমিতে এই প্রথম চট্টগ্রাম জেলার ইজতেমা অনুষ্টিত হবে। ২৯,৩০,৩১ ডিসেম্বর তিন দিনের ইজতেমার জন্য তৈরি করা হচ্ছে প্যান্ডেল, টয়লেট, অযুখানা, গোসলের জন্য পানির হাউস, খাবার পানি,ইলেকট্রিক। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি অনেকটা শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। আর মাত্র মাঝে একদিন বাকি।
সরেজমিন দেখা যায়, ইজতেমার যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে হাটহাজারী মেডিকেল গেইট থেকে ৪ কিঃ মিঃ মধ্যে সড়কের দু’পাশে কেটে ফেলা হয়েছে গাছ, প্রধান সড়কের পাশে ভরাট করে সড়কের প্রস্তও বড় করা হয়েছে। যাতায়াতের জন্য রাস্তার কাজ পুরোদমে চলতেছে সংস্কার কাজ। বিনাশ্রমে এই কাজে অংশগ্রহণ করতেছেন মাদ্রাসা, কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সহ চট্রগ্রামের বিভিন্ন থানার ধর্মপ্রাণ মুসলমান শিশু, যুবক,বৃদ্ধ এবং বিভিন্ন পেশাজীবী লোকজন।

জানাগেছে, ঢাকা টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব-ইজতেমা বিগত বছরগুলোতে মুসল্লিদের পর্যাপ্ত সংকুলান না হওয়ায় ইজতেমা কর্তৃপক্ষ প্রতিটি জেলায় জেলায় বিভিন্ন তারিখে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন। এতে করে কমে আসবে রাজধানী ঢাকার উপর চাপ। উক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারই প্রথম চট্টগ্রাম জেলার ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে হাটহাজারী’র মির্জাপুরে।
ইজতেমার নির্ধারিত স্থানের পার্শ্বে রয়েছে হালদার প্যারালাল খাল প্যারালাল খালে পানি দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন যাতে মুসল্লিদের পানির কষ্ট পেতে না হয়। উক্ত বিলের উত্তর পাশ দিয়ে টয়লেট নির্মাণের সুবিধাও রয়েছে। অন্য থানার চেয়ে হাটহাজারীতে যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে। ইজতেমার জন্য হাটহাজারী উপজেলাটি নির্ধারণ করায় হাটহাজারীবাসীর মাঝে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।
ইজতেমা মাঠের কাজ দিন দিন কমে আসতেছে তাই যারা এখনও কাজে শরীক হতে পারেন নাই বরকতের জন্য অন্তত সকল কাজ থেকে পারেগ হয়ে ১ ঘন্টার জন্য কাজে শরীক হয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান ব্যাক্তির তালিকায় নিজের নাম লিপিবদ্ধ করতে চায়। যারা টংঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমার জন্য যেতেন। তখন তৈরি করা সবকিছু ব্যবহার করে ইজতেমা শেষ করে চলে আসতেন। কিন্তু চট্রগ্রামের ইজতেমা নিজেদের পাশে সৌভাগ্যর প্রতিক হয়ে চলে আসায় নিজে যতটুকু পারছেন কাজে শরীক হয়ে বুঝার চেষ্ঠা করছেন কতটুকু এই কাজে হেকমত এবং বরকত আছে। অনেকে ইতিমধ্য এই বরকতের অংশীদার হতে পেরে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে করছেন।
ইজতেমার প্রস্তুতির ব্যাপারে চট্টগ্রামের প্রশাসক মো. শামসুল আরেফিন জানান, তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক বিশ্ব ইজতেমায় তিনস্তরের নিরাপত্তা, যানজট নিরসনে নানা ব্যবস্থা, তাবলিগ জামাতের আড়ালে কেউ যেন কোনো অঘটন ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ইজতেমার মূল সমন্বয়ক মাওলানা মুফতি জসিম উদ্দিন জানান, লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের অংশগ্রহণর মধ্য দিয়ে ২৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মত চট্টগ্রামে বিশ্ব ইজস্তেমা হচ্ছে। আশা করি প্রতিবছর এখানেই ইজতেমা হবে। ইজতেমার জন্য সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।
এদিকে হাটহাজারিতে বিশ্ব ইজতেমার আঞ্চলিক পর্ব উপলক্ষে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে ভারী যান চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। সোমবার চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ইজতেমা আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) রেজাউল মাসুদ জানান, বৈঠকে ইজতেমায় অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ওই সড়কে কাঠ ও ইট বোঝাই যানবাহন বেশি চলাচল করে থাকে। ইজতেমা শুরুর আগের দিন থেকে চলাকালীন পর্যন্ত ওই সড়কে কোনো প্রকার ভারি যানবাহান চলাচল না করার জন্য অনুরোধ করা হয় পরিবহন মালিক শ্রমিকদের।
“এ প্রেক্ষিতে ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই সড়কে ভারি যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” তবে রাত ১০ টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ভারি যান চলাচল করতে পারবে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল।
ভিডিওতে দেখুন হাটহাজারীতে বিশ্ব ইসতেমার প্রস্তুতি:
https://www.youtube.com/watch?v=v1NJ0hTnUCs