
কক্সবাজারে বোনের ইজ্জত বাঁচাতে গিয়ে ইভটিজারদের মারধরের শিকার হয়েছেন ভাই। নির্মমভাবে প্রহারের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আরমান ও রায়হান নামের দুই বখাটে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার রাত থেকে ভিডিওটি বিভিন্ন জনের ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। নির্মমভাবে প্রহারের দৃশ্য দেখে সর্বমহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩১ মে কক্সবাজারের খুরুশকুলে এ ঘটনা ঘটলেও তা প্রকাশ পায় শনিবার।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস আজ রবিবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘটনাটি অবগত হওয়ার পর শনিবার রাতেই পুলিশের ২টি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে। অভিযুক্ত আরেকজনের নাম মোহাম্মদ জামাল। তাকে ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দুইজন যুবক হাতের লাঠিসোঁটা নিয়ে বেপরোয়া মারধর করছে। বোনের ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে সব আঘাতগুলো পড়ছে ভাইয়ের উপরে। দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি মারধরে আব্দুল মোনাফের সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে যে কয়জন মানুষ দেখা যাচ্ছে তারাও উদ্ধারে এগিয়ে যায় নি। মনুপাড়ার মোহাম্মদ জামাল, মোঃ রায়হান ও কুলিয়া পাড়ার আরমান ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
হিজাব ও বোরকা পরিহিত ভিকটিম মহিলাটির নাম নাফিসা আক্তার রিমা বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, রিমাকে প্রতিদিন স্থানীয় কিছু বখাটে শ্রেণীর লোক উত্ত্যক্ত করতো। বারবার একই ঘটনা হতে দেখে এগিয়ে যায় ভাই আব্দুল মুনাফ। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটেচক্রের রোষানলে পড়লো ভাই। তাকে প্রকাশ্য দিবালোকে মারধর করে ক্ষত বিক্ষত করে দিল।
মারধরের শিকার আব্দুল মোনাফ জানান, “আশ্রয়ণ প্রকল্পে পাওয়া ফ্ল্যাটে তারা থাকেন। ওই দিন তার বোন মামার বাড়ি যাচ্ছিল। পথে খুরুশকুল মনুপাড়ার জামাল-রায়হানরা তার বোনকে নোংরা ভাষায় কথা বলছিল। এক পর্যায়ে বোন ফিরে আসতে চাইলে তারা বার বার পথ আটকাচ্ছিল। আমি প্রকল্প থেকে এসব দেখে দৌড়ে আসি।”
“জিজ্ঞেস করার সঙ্গে সঙ্গে তারা আমার বোনকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাতে। তখন আমি বোনকে জড়িয়ে ধরি। তাকে কেন মারছে জানতে চাইলে তারা আমাকেও মারধর শুরু করে।”
মোনাফ আরও জানান, ব্যাপক প্রহারে আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে যান। পরে থানায় অভিযোগও দেন।
এদিকে, ভিডিওটি ভাইরাল হলে টনক নড়ে পুলিশের অন্যদিকে পালিয়ে গেছে হামলাকারীরা।