
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মা জেসমিন আক্তারকে গুলি করে হত্যার পর পলাতক ছেলে মাঈনুদ্দিন মোহাম্মদ মাঈনুকে আটক করেছে র্যাব। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার।
গতকাল বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকায় বাসে তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মো. নুরুল আবছার বলেন, নিজ সন্তানের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে মাঈনুদ্দিন মোহাম্মদ মাঈনুকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা করা হয়েছে।
এদিকে র্যাব চাঁন্দগাও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মাকে গুলি করে হত্যার পর পলাতক মাইনু গতকাল বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘গত ১৩ জুলাই তারা বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই সম্পত্তি নিয়ে তাদের ভাই-বোনের মাঝে ও ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ তুঙ্গে উঠে যায়। গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে মেয়ে নিপাকে নিয়ে ব্যাংকে যান জেসমিন আক্তার। তবে ব্যাংকে থাকা ১৩ লাখ টাকা তারা তুলতে পারেনি। কারণ, বাবা (শামসুল আলম মাস্টার) মারা যাওয়ায় টাকা তোলার উত্তারিধকার হিসেবে নাম ছিল বোন শায়লা শারমিন নিপার নাম। তাই তারা টাকা তোলার প্রসেসটা জানতে গিয়েছিল। কিন্তু মাইনুলকে না জানিয়ে বোনকে নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার কথা শুনতে পেয়ে দুপুরের দিকে মায়ের সঙ্গে তর্ক শুরু করে। এরই একপর্যায়ে মাকে গুলি করে মাইনুল। মাকে হত্যা করে পটিয়া থেকে প্রথমে চলে যায় দোহাজারী। সেখানে গিয়ে দুই-তিন জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে সে এক বড় ভাইকে ধরে একজনের ফ্যাক্টরির অফিসে রাতযাপন করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি একটি গুদামের পাশে লুকিয়ে রাখে। প্রতিটি কাজ সে অতন্ত ঠাণ্ডা মাথায় ও চিন্তাভাবনা করেই করেছে। পরে গতকাল বুধবার বিকেলে একটি বাসে করে ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে চুক্তি করে টিকিটও কাটেনি; যাতে তাকে কেউ ধরতে না পারে এবং তার ব্যবহৃত মোবাইলটিও পানিতে ফেলে দেয়।’
মাইনুলের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালেরও একটা মামলা আছে এবং অস্ত্র ও অবৈধ সমাবেশসহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে বলে জানান এম এ ইউসুফ।
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তির ভাগভাটোয়ারা নিয়ে মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার এক পর্যায়ে পটিয়ায় পৌরসভার নিজ বাড়িতে ছেলে মাঈনুর গুলি করে তার মা, পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র শামসুল আলম মাস্টারের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৫০) গুলি করে হত্যার পর পরই সে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ওই রাতে পটিয়া থানায় মাঈনুকে একমাত্র আসামি করে বোন শায়লা শারমিন নিপা বাদী হয়ে পটিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।