সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, দেশে ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির, বিনোয়োগ শূন্যের কোঠায়। ব্যাংকে টাকার পাহাড় পড়েছে অথচ বিনিয়োগ করার কেউ নেই। যুবসমাজ আজ বিপথে চলে যাচ্ছে কর্মের অভাবে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে এসএ টাওয়ার উদ্ভোধনকালে তিনি একথা বলেন।
এরশাদ তার শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ১৯৮৮ সালে ১ ফেব্রুয়ারি আমি যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করি। ১০ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা করেছি, ৫০৮টি ব্রিজ করেছি। ৪৬০টি উপজেলা করে গ্রাম পর্যায়ে উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়েছি। এমনকি শেখ হাসিনার বাড়ি যাওয়ার সে টুঙ্গিপাড়ার রাস্তা আমি পাকা করে িদিয়েছিলাম। কিন্তু কোথাও আমার নাম নেই। আমার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি গানের সুরে বলেন, যদি কাগজে লেখ নাম, কাগজ ছিড়া যাবে, পাথরে লেখ নাম, পাথর খয়ে যাবে, হৃদয়ে লেখা নাম মুছা যাবে না। আমি জনগণের হৃদয়ে আছি।
তিনি বলেন, সেনা ছিলাম, সেনাপ্রধান ছিলাম। রাজনীতিবিদ হওয়ার চেষ্টা করেছি, পারিনি। কারণ এ পথ খুব পিচ্ছিল।
এরশাদ বলেন, আমি রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের আমন্ত্রণে হোয়াট হাউজে তার সাথে সাক্ষাত করেছিলাম। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আমিই প্রথম, আমিই শেষ। প্রেসিডেন্ট রিগ্যান তার আত্মজীবনী বইয়ে লিখেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় এমন একজন রাষ্ট্রপধান আছেন, যার মাঝে আমি দেশপ্রেম ও উন্নয়নের স্পৃহা দেখতে পেয়েছি, সে হলো বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি যখন সৌদি সফরে গিয়েছিলাম, তখন বাদশাসহ পুরো মন্ত্রিসভা বিমান বন্দরে আমাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন, পৃথিবীর কেউ এ সম্মান পাননি। এমনকি আমেরিকার কোনো প্রেসিডেন্টও পাননি।
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি আক্ষেপ করে বলেন, তারপরও আমি স্বৈরাচার! আমার হাতে কয়জনের রক্তের ছোয়া আছে! আমার হাতে রক্তের দাগ নাই, যে কারণে আমি বেঁচে আছি। আমি লাগাতার ছয় বছর জেলে ছিলাম। এদেশের কোনো নেতা লাগাতার এত বছর জেল খাটেনি। বঙ্গবন্ধুও লাগাতার তিন বছর জেল খেটেছেন।
প্রাদেশিক ব্যবস্থা কায়েম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, ১৭ কোটি মানুষের শাসন একজনের পক্ষে সম্ভব নয়, প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। কিন্তু অনেকে এর গুরুত্ব বুঝেও তা বাস্তবায়ন করছে না। কারণ প্রস্তাবটি যেহেতু এরশাদ দিয়েছেন।
উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে এস এ টাওয়ারে সত্বাধিকারি সালাউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন, সাবেক মন্ত্রী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মেজর অব. মো. খালেদ আখতার, হাজী সাইফুদ্দিন মিলন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, যুগ্ম মহাসচিব কাজী আশরাফ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় নেতা এমএ, রাজ্জাক খান, নাজমুল খান, নাজিম চিশতি, আরিফুল ইসলাম রুবেল, ওয়াহিদুর রহমান প্রমুখ।
