
সম্মেলনের ৫ মাস পর ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কমিটি।কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. দিদারুল ইসলামকে সভাপতি এবং বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র মো. জহুরুল ইসলামকে (জহুর) সাধারণ সম্পাদক এ কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘন্টার মাথায় কাঙ্খিত পদ না পেয়ে পদত্যাগ করছে একের পর এক নেতা।
কমিটি ঘোষণার পর বুধবার রাতে ফেসবুক পেজে হাতে লিখিত দুই পৃষ্ঠার এক চিঠি দিয়ে পদত্যাগের কথা জানান নতুন কমিটির সহসভাপতি পার্থ সারথী চৌধুরী ও কম্পিউটার টাইপ করা চিঠিতে পদত্যাগ করেছেন মো. ফারুক।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের মাধ্যমে সভাপতি শেখ ফজলে শামস বরাবর পাঠানো পদত্যাগপত্রে পার্থ সারথি চৌধুরী জানান, তিনি দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে সিভি জমা দিয়েছেন, সহসভাপতি পদে নয়। কিন্তু ঘোষিত কমিটিতে তাঁকে সহসভাপতি করা হয়েছে। সে কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন। বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেও অনুরোধ জানান তিনি।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর সদ্য সহসভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. ফারুক। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পর তাঁর ফেসবুকে পেজে একটি পদত্যাগপত্র দিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন।
এছাড়া কমিটিতে বিভিন্ন পদে প্রার্থী হয়ে সিভি জমা দেয়া নেতারা পদ না পেয়ে হতাশ হয়েছেন বেশ কয়েকজন নেতা। তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ না করলেও কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমে।
জানাগেছে, সদ্য ঘোষিত কমিটিতে যে দুজনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তারা কেউ যুবলীগ করেন না। তারা মূলদল আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত। মূলত যুবলীগের নেতৃত্বে আসার জন্য তারা আওয়ামী লীগ ছেড়ে যুবলীগে এসেছে।
এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় যুবলীগের কেন্দ্র ঘোষিত কমিটির নামের তালিকায় ৩৫ জনের নাম থাকলেও কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে থেকে ৪১ জনের নাম ঘোষণার কথা জানানো হয়। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। টাইপিং ভুলের কারণেই এমনটা হয়েছে বলে দাবি করছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতারা। এরপর দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ নতুন করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রথম বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের পর আমরা পুনরায় আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। যেখানে ৩৫ জনের নাম ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে জানতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের মোবাইল একাধিকবার কল করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৮ মে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। ওই দিন সম্মেলন শেষ করে বিকেলে কাউন্সিল অধিবেশন শেষে অদৃশ্য কারণে কমিটি ঘোষণা না করে কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকা চলে যান। এরপর থেকে কমিটি ঘোষণা নিয়ে চলছিল নানা জল্পনা-কল্পনা। বেশ কিছু বিতর্কিত মুখকে শীর্ষ পদ পেতে নানাভাবে তদবির ও প্রাণপণ চেষ্টা করতে দেখে কমিটির স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়েও শঙ্কিত ছিলেন পদ-প্রত্যাশী ক্লিন ইমেজের নেতারা।
তবে ঘোষিত কমিটির অনেকেই সরাসরি আওয়ামী লীগের পদ পদবিতে থেকেও কীভাবে যুবলীগের পদে আসছেন এ নিয়ে জেলা জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
