প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “বিএনপির দুইগুণ ভোট ডাকাতি আর মানুষ খুন” ’৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল, ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই জনগণ তাকে মেনে নেয়নি। ভোট চুরি করলে জনগণ মেনে নেয় না। ওরা ভোট চুরি করেই ক্ষমতায় আসতে চায়। গণতান্ত্রিক ধারা তারা পছন্দ করে না। গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে আমি আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। ২৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিজয়ের মাসে এগুলো চট্টগ্রামবাসীর জন্য আমার উপহার।
তিনি আজ রবিবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আয়োজিত বিশাল সমাবেশে এ বক্তব্য দেন।
এসময় তিনি চট্টগ্রামে প্রয়াত আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব প্রিয় তারিখ, এজন্যই তারা ওইদিন ঢাকায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর নাকি তারা ঢাকা অচল করে দেবে। ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে এ দেশে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মিশন শুরু হয়েছিল। ১০ ডিসেম্বর সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের হত্যা করা হয়। অর্থাৎ এই দিনে বুদ্ধিজীবী হত্যার মিশন শুরু হয়। এ কারণেই এই তারিখ বিএনপির এত প্রিয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২১ আগস্ট আমাদের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় আইভি রহমানসহ আমাদের ২২জন নেতাকর্মী মারা যান। আমাকে আমার নেতকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে রক্ষা করেন। আমিও সেদিন মারা যেতে পারতাম। নেতকর্মীরা আমাকে বাঁচিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ারা পারে মানুষ হত্যা করতে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা মানুষ হত্যা করেছিল, এজন্যই পাকিস্তানি দোসর বিএনপি-জামায়াত মিলে মানুষ হত্যা করেছে। বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন দিয়ে তারা মানুষ হত্যা করেছে। চারিদিকে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে তারা, তিন হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে এতটুকু মনুষ্যত্ব আছে, তারে এভাবে মানুষ হত্যা করতে পারে? বিএনপির দুটি গুণ, মানুষ হত্যা আর ভোট চুরি। এজন্য তারা ভোট চায় না। আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আওয়ামী লীগ আসলে দেশে উন্নতি হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেই কীভাবে মানুষ খুন করেছে আপনারা দেখেছেন। চট্টগ্রামে এমন নেতাকর্মী নেই যাদের ওপর হামলা করে নাই। তাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পায় নাই।
তিনি বলেন, আমরা কষ্ট করে রিজার্ভ বাড়ালাম। দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় আসি তখন রিজার্ভ মাত্র পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আমরা রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছিলাম। আমরা বাংলাদেশে বিনামূল্যে টিকা দিয়েছি। রিজার্ভের টাকা মানুষকে দিয়েছি, ওষুধ কিনেছি, ভ্যাকসিন কিনেছি। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করিয়েছি। জনগণের কথাই আমরা ভাবি, তাদের কল্যাণেই কাজ করি।
শেখ হাসিনা বলেন, ৩৫ লাখ মানুষকে বিনা পয়সায় ঘর করে দিয়োছি, একটি মানুষও ঘরহীন থাকবে না। ওরা মানুষকে কিছু দিয়েছে? কয়েকদিন আগে সারাদেশে ১০০টি সেতু, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে স্কুল কলেজ, রাস্তাঘাট, বাজার করে দিয়েছি। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি।
সমাবেশে জনতার উদ্দেশ্যে হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের হাতে মোবাইল ফোন আছে না? এগুলো আমরা দিয়েছি। বিএনপির আমলে দিতে পারেনি। দেশকে আমরা ডিজিটাল করেছি। আর সে ডিজিটালকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি জামায়াত সককারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় না। নির্বাচনের আগে ও পরে ভোটে অংশ না নিয়ে তারা দুটিই জিনিস পারে। এক ভোট চুরি এবং দুই মানুষ খুন।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। সে জন্য জনগণ মেনে নেয়নি। তাই তিনি বাধ্য হন পদত্যাগ করতে। সে কথা বিএনপির মনে রাখা উচিত। ওরা ভোটে যেতে চায় অবৈধ উপায়ে। চট্টগ্রামের মানুষের জন্য ২৯টি প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। এগুলো আপনাদের জন্য উপহার।’
বিএনপি জনগণের অর্থ পাচার করেছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন করি। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করি। কিন্তু বিএনপি শুধু এগুলোর বিরোধিতা করে। তারেক রহমান নামে কুলাঙ্গার বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বোমাবাজি করছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে।’