
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর এর উদ্যোগে নগরীতে বর্ণাঢ্য র্যালী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৬ ডিসেম্বর শুক্রবার ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য নোমানুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য র্যালীটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিবিরের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন,দেশের মানুষ যে জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, সেই বাক স্বাধীনতা, সেই ভোটাধিকার, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, জন নিরাপত্তা আজও সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। প্রতিষ্ঠিত হয়নি মানুষের মৌলিক অধিকারও ফলে বিজয়ের ৫২’তম বছরে এসেও এদেশের ছাত্র জনতা এখনো বিজয়ের প্রকৃত সুফল পাচ্ছেনা।
সমাবেশে বক্তারা মহান বিজয় দিবসে সকলকে শুভেচ্ছা জানান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের শাহাদাতের কবুলিয়তের জন্য দোয়া করে বলেন, বিজয়কে অর্থবহ করতে ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
এসময় দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে সোচ্চার বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি বুয়েটের আরেক শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা রক্ষায় আমাদের সকলকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সততা, দক্ষতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। দেশটা আমাদের এবং দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে। বিজয়কে অর্থবহ করতে এবং দেশবিরোধী যেকোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
এসময় মহানগর উত্তর সেক্রেটারি সাইফুদ্দীন খালেদসহ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজয় দিবসে জামায়াতের আলোচনা সভা :

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুিষ্ঠত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, এফ এম ইউনুছ, সদরঘাট থানা আমীর এম এ গফুর, জামায়াত নেতা ডা. আব্দুল মতিন, সরওয়ার জাহান সিরাজি।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন সেজন্য শুকরিয়া আদায় করছি। দেশকে স্বাধীন করার জন্য ঈমানের সাথে যারাজীবন দিয়েছেন তাদের শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করছি। প্রতিটি জাতির জীবনে তাৎপর্যপূর্ণ দিন থাকে, ১৬ ডিসেম্বর আমাদের জন্য তেমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজকের এই দিনে রেসকোর্স ময়দানে পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দুনিয়ার মানচিত্রে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের মর্যাদা লাভ করেছিল। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের বয়স ৫১ বছর পেরিয়েছে। আমাদের সংবিধানে যে মৌলিক দিকগুলো রয়েছে, মানুষের সব ধরণের নাগরিক অধিকার, মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা, অর্থনৈতিকভাবে দেশকে স্বাবলম্বী করা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাকস্বাধীনতা, সামাজিক ন্যায় বিচার ইত্যাদি নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব ছিল যারা সরকার পরিচালনা করেছে। কিন্তু আমরা আজকে বিজয় অর্জন করার পরও দেশের অধিকাংশ মানুষের মাঝে পরাজয়ের গ্লানি দেখতে পাচ্ছি, দেখতে পাচ্ছি অসহায় মানুষের চোখের পানি আর আহাজারি। কারণ বিজয়ের ৫১ বছর পরে এসে আমাদের শাসক গোষ্ঠী আবারও আমাদেরকে দুর্ভিক্ষের দুঃসংবাদ দিচ্ছে। আমাদেরকে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হচ্ছে। এই দুর্ভিক্ষ দেখার জন্য আমাদের দামাল সন্তানেরা কি রক্ত দিয়েছেলেন? স্বাধীনতা এনেছিলেন?