২০২৬ সালে বে-টার্মিনাল অপারেশনে যাবে, পাশাপাশি ২০২৬ সালের শেষে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরও চালু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আজ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বন্দরের সিসিটি-১ জেটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ বার্থিং এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের কাজ ৯৫ ভাগ শেষ। অতি দ্রুত এটি চালু হবে। ২০২৪ সালে আমরা বে-টার্মিনাল চালুর লক্ষ্য ছিল। করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। সাড়ে ৩ হাজার মিটারের বে-টার্মিনালের কাজ সকলের পরামর্শ নিয়ে করা হচ্ছে। ডিপিপি কার্যক্রম শেষ হলেই বে-টার্মিনালের কাজ শুরু হবে। শতভাগ প্রস্তুত করে আশা করছি
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে সর্বপ্রথম ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ বার্থিং এর উদ্বোধন হয়েছে। আজকে চট্টগ্রাম বন্দরের ইতহাসে বড় জাহাজ ভেড়ানোর সময় আমরা উপস্থিত আছি, এটা আমাদের সবার জন্য গর্বের। আমরা এত বড় জাহাজের বার্থ নিশ্চিত করতে পেরেছি। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক অন্যরকম। স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু যখন জেল থেকে বের হন তখন তাকে কিছু অপশন দেয়া হয়েছিল। তখন তিনি যুক্তরাজ্যকে বেছে নিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ ভেড়ানোর কাজে যে কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা করেছেন তারাও যুক্তরাজ্যের। যাই হোক, চট্টগ্রাম বন্দর অচল মানেই গোটা দেশ অচল। মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎককেন্দ্র, পদ্মাসেতুতে চট্টগ্রাম বন্দরের অবদান আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু থেকে সরে গিয়ে বিশ্বব্যাংক এখন আফসোস করছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অনেক সংগঠনের সাথে বাংলাদেশ জড়িত। বলা হয়েছিল বাংলাদেশ হল তলাবিহীন ঝুড়ি। এদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এগোতে পারবে না। অথচ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে আজ সকলেই সমীহ করছে। আলোচনায়ও এখন বাংলাদেশ। আজ আমরা ইতিহাসের সাক্ষী। আগামীতে চট্টগ্রাম বন্দর আরো ইতিহাস গড়বে। বাংলাদেশ আরো উপরে যাবে। পৃথিবীর সকল বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশেই আসবে। চট্টগ্রাম নিজের সাহস ও শক্তি দিয়ে এগিয়ে যাবে। বন্দরের অংশীজনদের বলব আপনাদের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা। আমি চাই বন্দর আরো এগিয়ে যাক।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হলে বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে এগিয়ে যেতে হবে। তলাবিহীন ঝুড়ি যারা বলেছে তারা শুধরে নিচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আমি বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে আরও বেশি জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করবে।
তিনি বলেন, ১০ মিটার ড্রাফট নিশ্চিত করতে পেরেছি। ১৪ বছর বাংলাদেশের অগ্রগতির কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের অংশীজনদের দাবি সরকার গুরুত্ব দেয়। ১৮টি গ্যান্ট্রি ক্রেন এ বন্দরে। ৪৮ ঘণ্টায় একটি জাহাজ হ্যান্ডেল হচ্ছে। দ্রুততার সঙ্গে পিসিটি চালু করতে পারবো। আজকে আমরা যে ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে আছি (সিসিটি-১) সেখানে ১৮টি গেন্টি ক্রেন দিয়ে কাজ চলছে। আপনাদের দাবি দাওয়ার কারণে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এর কাজ শেষের পথে। ৯৫ ভাগ কাজ শেষ। দ্রুত এটি চালু হবে। বে- টার্মিনাল ২০২৪ সালে চালুর লক্ষ্য ছিল। কিন্তু করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছি। সাড়ে ৩ হাজার মিটার বে- টার্মিনাল, আপনাদের পরামর্শ নিয়েই সব করা হচ্ছে। ডিপিপি কার্যক্রম শেষ হলে বে টার্মিনালের কাজ শুরু হবে। আশা করছি ২০২৬ সালে বে-টার্মিনাল অপারেশনে যাবে।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার এইচ ই রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, শিপিং এজেন্ট এসোশিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন, বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।