
ফেনীতে জুমার নামাজের সময় সদ্য প্রয়াত দেশের প্রখ্যাত মওলানা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন মসজিদের ইমাম মাওলানা মো: সলিমুল্লাহ।
শুক্রবার (১৮ আগষ্ট) ফেনী সদর উপজেলার ফকিরহাট মাদরাসা জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর শত শত মুসল্লিদের সামনে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর মানিকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা খতিব মাওলানা মো: সলিমুল্লাহকে মারধর করে মসজিদ তেকে বের করে দেয়। তার মাথার পাগড়ি ও গায়ের আবা (পাঞ্জাবির উপরে পরিধেয়) খুলে নিয়ে প্রস্রাব খানায় ফেলে দেয়। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ফকিরহাট বাজার জামে মসজিদের মুসল্লি আবদুল ওহাব জানান, জুমার নামাজ শেষে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে ইসলামে বিশেষ অবদানের কারণে সাঈদীসহ অন্যান্য আলেম-ওলামার জন্য দোয়া করতে বলেন। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর মানিকের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক ইমামকে থামিয়ে মেহরাব থেকে ঘাড় ধরে বাইরে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁর মাথায় থাকা পাগড়ি ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লীরা জানায়, জুমার নামাজ শেষে খতিব মুফাসিসরে কোরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মাগফিরাত কামনায় মুসল্লীদের দোয়া করার অনুরোধ করেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন উশৃঙ্খল যুবক তেড়ে এসে মেহেরাবের মধ্যে খতিবকে মারধর করে। কয়েকজন মুসল্লি তাদের নিবৃত্ত করলে খতিব সুন্নত নামাজ পড়তে দাঁড়ান। তিনি সিজদারত অবস্থায় ওই যুবকরা ফের তার উপর হামলা চালায়। তাকে বেদম মারধর করে মাথার পাগড়ি ও গায়ের আবা খুলে নিয়ে প্রস্রাব খানায় ফেলে দেয়। হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
লাঞ্চিত হওয়া মসজিদের খতিব মাওলানা মো: সলিমুল্লাহ তাকে মারধর, জামা-পাগড়ি খুলে নেয়ার ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। তিনি ন্যায় বিচার করবেন।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, উদ্ভুত ঘটনার জন্য খতিব উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে মাফ চাইলে তাকে রেহাই দেয়া হয়। তাকে মসজিদের খতিব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিতর্কিত একজন ব্যক্তির জন্য দোয়া চাইলে মুসল্লিরা ক্ষেপে যান। তখন আমি তাঁকে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেছি।’ তবে মারধরের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।