
চট্টগ্রামের রাউজানের চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয়কে অপহরণ ও খুনের পরিকল্পনায় জড়িত আরও দুই উপজাতি যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। তারা হল-উচিং থোয়াই মারমা ও তার অন্যতম সহযোগী ক্যাসাই অং চৌধুরী।
পোল্ট্রি ফার্মের মুরগীর খাবার চুরি করার প্রতিবাদ করায় করায় কলেজ ছাত্র হৃদয়কে খুনের পর মরদেহ যাতে শনাক্ত করতে না পারে এ জন্য লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে।
আজ রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র হৃদয় হত্যাকাণ্ড নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান র্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো মাহবুব আলম।
তিনি বলেন, অভিযুক্তরা মুরগিকে পর্যাপ্ত খাবার না দিয়ে বিক্রি করে দিতে। এ নিয়ে পোল্ট্রি ফার্মের ম্যানেজার হৃদয় তাদের ভৎর্সনা করে। এ কারণে খামারে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কয়েক দফা কথা কাটাকাটি হয়। তখন হৃদয়কে শিক্ষা দিতে অপহরণের পরিকল্পনা করে। অপহরণের একদিন পর ২৯ আগস্ট বিকালে রঙিন পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। উচিংথোয়াই মারমা নিজেই ছুরি দিয়ে হৃদয়ের গলা কাটে। তার সহযোগী ক্যাসাই অং চৌধুরীসহ আরও চারজন হৃদয়ের হাত-পা এবং মুখ চেপে ধরে। অপহরণের সাথে জড়িতদের ছিল খামারে কাজ করা শ্রমিকরা। হত্যার পর মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। লাশ যাতে চিহ্নিত করতে না পারে এ জন্য টুকরো টুকরো করা হয়।
গতকাল শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযান চালিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে উচিংথোয়াই মারমাকে (২৩) গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল ৫টার দিকে আসামি ক্যাসাই অং চৌধুরীকে (৩৬) নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা খুনের বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি দিয়েছে বলে দাবি করছে র্যাব।
হত্যার পর হৃদয়ের মাংস খাওয়ার র্যাব অধিনায়ক জানান, হৃদয়কে হত্যার পর মাংস খেয়ে ফেলেছে- এমন একটি খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা বলেছে, এ ব্যাপারে তারা জানে না। তবে শরীরের মাংস আলাদা করে ফেলে দেয়া হয়েছিল এটি সত্য। মাংস খাওয়ার বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাউজানের গহীন অরণ্য থেকে হৃদয়ের খন্ড-বিখন্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধার করে ফেরার সময় গণপিঠুনিতে নিহত হন অভিযুক্ত উমংচিং মারমা নামে এক যুবক। লাশ উদ্ধারের ১৪ দিন আগে অপহৃত হন হৃদয়।