ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

সদরঘাটে মা-মেয়েকে হত্যা : আসামী বেলালের মৃত্যুদণ্ডের রায়

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

ফাইল ছবি।

চট্টগ্রামে মা-মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলায় বেলাল হোসেন (২৭) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে অপর আসামী টিটু সাহা (৪৬) কে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ষষ্ঠ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেন।

২০১৫ সালের ২৭ মে নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ার নিজ বাসায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন নাছিমা বেগম (৩৭), মেয়ে রিয়া আক্তার ফাল্গুনী (১০)।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বেলাল হোসেন কুমিল্লার মুরাদনগর থানার কোরবানপুর গ্রামের মন মিয়ার ছেলে। টিটু সাহা একই থানার বাখরাবাদ রঞ্জিত মাস্টার বাড়ির নেপাল সাহা’র এর ছেলে।

গ্রেপ্তারে পর বেলাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছিলেন, তিনি ফারজানা নামে এক গার্মেন্টেস শ্রমিককে ভালোবেসেছিল। তার অবদার পূরণ এবং তাকে বিয়ে করার জন্যই মূলত টাকাও স্বর্ণালঙ্কার লুট করতে গিয়ে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটায়।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু বলেন, মা মেয়ে হত্যা মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। বেলাল যে স্বর্ণ লুট করেছিল তা কিনে নিজের হেফাজতে রাখায় আসামি টিটু সাহাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, নগরীর দক্ষিণ নালাপাড়ায় মোবাশ্বের মিয়ার ছয় তলা ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন মাংস ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম। ওই বাসায় তার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩৭), মেয়ে রিয়া আক্তার ফাল্গুনী (১০), শাহ আলমের শ্যালক আলাল ও দুই ছেলে থাকতেন। ২০১৫ সালের ৭ মে সকালে শাহ আলম দোকানে চলে যান। সকাল ৯টার দিকে তার দুই ছেলে স্কুলে যায়। তখন ঘরে ছিল নাছিমা ও মেয়ে রিয়া। সকাল পৌনে ১০টার দিকে শাহ আলমকে তার শ্যালক আলাল ফোন করে জানায় নাছিমা ও রিয়া হত্যার শিকার হয়েছে।

ঘটনার দিন ৭ মে সকাল ৯টার দিকে তার বাসা থেকে বের হয়ে সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ার শাহ আলমের বাসার সামনে যায়। এ সময় ওই ছুরিটি নিয়ে যায়। শাহ আলমের বাসা থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে মানুষের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে সে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শাহআলমের ২ ছেলে হৃদয় হোসেন (১২) এবং রিয়াদ হোসেন (১১) স্কুলে চলে যায়। এর আগেই সে দোকানে চলে যায়। তাও বেলাল নিশ্চিত করে নিজেই।

শাহআলমের মেয়ে রিয়াও তখন স্কুলে। বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই সে দোকানের ছুরিটি শার্টের পেছনে ও প্যান্টে গুঁজে শাহ আলমের ৬তলা বিল্ডিংয়ের ৪র্থতলার বাসায় যায়। যেভাবে খুন করা হয়েছে ॥ তখন শাহ আলমের স্ত্রী নাছিমা বেগম রান্না করছিলেন। পাশের কক্ষে তার একমাত্র মেয়ে রিয়া আক্তার ফাল্গুনী (১০) ঘুমাচ্ছিল। পেটের ব্যথার কারণে সে স্কুলে যায়নি। বেলালকে দেখে নাছিমা বেগম (৩৭) বাসায় আসার কারণ জিজ্ঞাসা করে। একপর্যায়ে বেলাল প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে নাছিমার দিকে এগিয়ে যায় এবং ছুরি দিয়ে তার পেটে ঘা মারে। এ সময় নাছিমা বেলালকে আটাকানোর চেষ্টা করে। বেলাল নিজেকে রক্ষা করতে নাছিমার চুলের মুঠি ধরে রান্নাঘরের সামনের মেঝেতে ফেলে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই করে। মায়ের চিৎকার শুনে মেয়ে রিয়া এগিয়ে আসে। ঘটনা দেখে ফেললে বেলাল রিয়াকে টেনে বাথরুমের দিকে নিয়ে যায়। সে চিৎকার শুরু করলে তাকেও বাথরুমে ফেলে জবাই করে। নিজের অপরাধ ঢাকতে বেলাল ছুরিটি লজিং মাস্টারের কক্ষের সামনে ফেলে যায়। আলমারি খুলে নগদ ৬০ হাজার টাকা এবং কিছু স্বর্ণ নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে নিহতের দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে দ্রুত বাসা ত্যাগ করে। কিছুক্ষণ পরে শাহ আলম তাকে ফোনে আসতে বললে সে পুনরায় এসে লাশ নামানোর কাজে পুলিশকে সহায়তা করে। ঘাতক বেলাল যা জানিয়েছে ॥ এ দুটি মোবাইল সে তার প্রেমিকাকে দিয়ে আসে। কয়েকদিন পর আবার মোবাইল দুটি নিয়ে আসতে গেলে প্রেমিকা ফারজানা একটি মোবাইল ফেরত দিতে বাদসাধে। কারণ ফারজানার ভাই রুবেল একটি মোবাইল পছন্দ করেছে। অন্যটি তার পরিচিত আশরাফুলকে দিয়েছে। স্বর্ণগুলো বাকলিয়ার একটি দোকানে ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে। প্রেমিকার শখ মেটাতে গিয়ে ওই টাকায় গত ৯ মে একটি টেলিভিশন, একটি ডিভিডি প্লেয়ার, দুটি সাউন্ড বক্স রাউজান ইলেক্ট্রনিক্স নামের একটি দোকান থেকে ক্রয় করে। ঘটনার আগেও ফারজানা গার্মেন্টেসে চাকরি করত। কিন্তু বেলালের মতেই সে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। কারণ বেলাল তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছে। গত ১ বৈশাখ সিআরবি এলাকায় ফারজানার সঙ্গে পরিচয় হয়। ফারজানাকে বিয়ে করতে ও তার শখ মেটাতে অনেক টাকা দরকার। টাকার জন্যই সে খুন করেছে। বেলাল ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করে মাসে ৮-৯ হাজার টাকা আয় করত। তার বাবা একজন রিক্সাচালক। একমাত্র ছেলে বেলাল।

২০১৫ সালের ২৭ মে হত্যাকাণ্ডের দিন হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে খুনের শিকার নাছিমা বেগমের স্বামী শাহ আলমের খালাতো ভাই বেলাল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নাছিমা বেগমের স্বর্ণালংকার নগরীর বাকলিয়া ইসহাকের পুল এলাকায় একটি জুয়েলার্সের কর্মচারী টিটু সাহার কাছে বিক্রি করেছিল বেলাল হোসেন। পরে টিটু সাহাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print