
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল উদ্বোধন ও আওয়ামী লীগের দলীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি টানেল’ উদ্বোধন ছাড়াও ১৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর এ ভাষণকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন চট্টগ্রামবাসী।
জেলা প্রশাসন শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে এসে নগরীর পতেঙ্গায় শহর প্রান্তে টানেলের নামফলক উন্মোচন করবেন। টোল প্রদানের পর টানেল পার হয়ে আনোয়ারার কাফকো কলোনি সংলগ্ন কেইপিজেড মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। টানেল উদ্বোধনের পর আগামীকাল রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের যান চলাচলের জন্য টানেলটি খুলে দেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, টানেল উদ্বোধন ও জনসভার মধ্যে তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার আরো বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ টাওয়ার, মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স, রাঙ্গুনিয়া ও আনোয়ারা জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, রাউজানে শেখ কামাল কমপ্লেক্স, শিকলবাহা খালের ওপর পিসি গার্ডার ব্রিজ এবং পটিয়ায় শেখ কামাল অডিটোরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হল, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, পর্যটক বাস, রিভার ক্রুজ ও ফুল ডে ট্যুর সংবলিত পর্যটন সেবা প্রকল্প, ডিসি পার্ক, হাজার বছরের নৌকা জাদুঘর, ১৯১টি ইউনিয়নে খেলার মাঠ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস ও বার্ডস পার্ক।

জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বেলা ১১টায় নেভাল একাডেমিতে আসবেন। সাড়ে ১১টায় উদ্বোধন করবেন বঙ্গবন্ধু টানেল। এরপর টানেল দিয়ে আনোয়ারা প্রান্তে সমাবেশে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারা জনসভা দুপুর ২টার মধ্যে শেষ করবেন। এর পরপরই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নতুন করে সেজেছে বন্দর নগরী। নগরীর বিভিন্ন সড়ক অলিগলিতে বড় বড় ব্যানার, বিলবোর্ড, তোরণের ছড়াছড়ি।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে এবং ১৫ বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে পোস্টার-ব্যানার লাগানো হয়েছে। বিশেষ করে পতেঙ্গা সড়ক ও শাহ আমানত সড়ক সেজেছে নতুন রূপে। মাইকে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে এলইডি টিভি বসিয়ে দেখানো হচ্ছে উন্নয়নের স্থিরচিত্র। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম. রেজাউল করিম চৌধুরীর উদ্যোগে নগরজুড়ে পাঁচ শতাধিক বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন, তোরণ শোভা পাচ্ছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরাও পাঁচ হাজারের বেশি ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়েছেন। এর বাইরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও প্যানাফ্লেক্স, ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
জনসভা প্রসঙ্গে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ৮ ফুট উচ্চতার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৮ ফুট প্রস্থের মঞ্চটি নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৫০০ জনের বসার ধারণক্ষমতা থাকলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পদধারী নেতা ও জনপ্রতিনিধি মিলে ৩০০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঢাকার কলরেডি থেকে আসা ২০০ মাইক জনসভাস্থলের আশপাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো হয়েছে। সমাবেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবে বলে তিনি জানান।
জনসভাকে কেন্দ্র করে সার্বিক তত্ত্বাবধানে কাজ করছেন আনোয়ারার সংসদ সদস্য ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে আনোয়ারায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন চট্টগ্রামবাসীর বিশাল পাওনা। আনোয়ারাবাসী এখন প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় রয়েছে।’