পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্যদের (এমপি) শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি সহ শতাধিক গাড়ি নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
আগামী ২১ জানুয়ারি দরপত্র প্রকাশের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী নিলামের আগে শুল্কসহ গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সাড়া পাওয়া যায়নি।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আমলের এমপিরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িগুলো আমদানি করেছিলেন। সংসদ ভেঙে যাওয়ায় সেই সুবিধা আদায় করা যায়নি।
মামলাসহ সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে ১শটি গাড়ি অবশেষে নিলামে বিক্রি করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। এরমধ্যে বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১টি ল্যান্ড ক্রুজার’ও রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব গাড়ির ইনভেন্ট্রি’ও শেষ হয়েছে। কাস্টমস ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গাড়ি নিলাম থেকে অন্তত ৪শ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৬০ শতাংশ হিসেবে ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা রিজার্ভ ভ্যালু নির্ধারণ করে নিলামে তোলা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্যদের নামে শুল্ক মুক্ত সুবিধায় আনা ৩১টি ল্যান্ড ক্রুজার। তার সঙ্গে যুক্ত হবে ২৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ট্যাক্স। সব মিলিয়ে এই ৩১টি গাড়ি থেকেই রাজস্ব আদায় হবে অন্তত ২২১ কোটি টাকা।
এর বাইরে নিলামে তোলা হয়েছে ৫টি হ্যারিয়ার, ১৩টি হাবাল, ৩টি করে স্কয়ার, প্রিমিও এবং নোয়া। এছাড়া ১টি করে রয়েছে র্যাভ-ফোর এবং ওসাকা ব্র্যান্ডের গাড়ি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন ইউএনবিকে জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বর্তমানে ৯শ’র বেশি আমদানি করা গাড়ি রয়েছে, যেগুলো নানা জটিলতার কারণে আমদানিকারক ছাড় করছেন না। এমনকি মামলার কারণে গাড়িগুলো’ও নিলামে তোলা যাচ্ছিলো না। এতে বন্দরের শেডগুলোতে বাড়ছিলো গাড়ির জট। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কঠোরতার মধ্যে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করার পরপরই ৩১টি গাড়ি জরিমানা দিয়ে আমদানিকারক ছাড় করিয়ে নিয়েছেন। তবে সাবেক কোন সংসদ সদস্য গাড়ি ছাড় করেননি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর নিলামে তোলা ১০০টি গাড়ির ইনভেন্ট্রি শেষ করার পর অন্তত ৫০টির ভ্যালু নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, বন্দরের খোলা শেডে পড়ে থাকা ৩শ গাড়ি ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। এই গাড়িগুলো নিলামের সিদ্ধান্ত না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জটিলতা।
চট্টগ্রাম কাস্টম বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডে পড়ে থাকা ৩০টি সিমেন্ট মিক্সার মেশিন এবং ১০টি ডাম্প ট্রাক’ও নিলামে বিক্রি করবে কাস্টম হাউজ।