ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

হেফাজত ও হাটহাজারী মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া শফী পুত্র আনাস!

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

বয়সের ভারে নুজ্য হয়ে পড়া আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র সংগঠন হেফাজতে ইসলাম ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন হাটহাজারী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় সফি পুত্র মাওলানা আনাস। এনিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে অরাজনৈতিক ইসলামী সংগঠন হেফজতে ইসলামের মধ্যে।

এমনিতে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে নির্মম হত্যা যজ্ঞের পর থেকে কোমড় ভেঙ্গে যায় হঠাৎ গর্জে উঠা দলটি। এর পর থেকে সরকারের সাথে আতাঁত করে অস্তিত্ব ঠিকে রাখার আন্দোলন চলে।

অভিযোগ রয়েছে সরকার থেকে নানান সুযোগ সুবিধা নেয়ার পেছনে নেপথ্য হিসেবে কাজ করেছেন সফি পত্র আনাস। গত তিন বছরে হেফাজতের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আনাস মাদানী। কাগজে কলমে আহমদ শফি আমীর হলেও মূলত আনাসের ইচ্ছা অনিচ্ছা হেফজতের দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছে। এ নিয়ে হেফাজত নেতাদের বিরোধ দেখা দিলেও সর্বজন শ্রদ্ধেয় আহমদ শফি’র দিকে তাকিয়ে নেতারা প্রকাশ্যে কোন প্রতিবাদ করেনি।

.

আল্লামা শাহ আহমদ শফী বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ্য হয়ে পড়ার পর থেকে দল এবং মাদ্রাসার সব কর্মকান্ড চলছে আনাসের একক সিদ্ধান্তে। আর আনাসের এসব কর্মকাণ্ডের পথে যাদেরকে বাঁধা মনে করছেন তাদের একে একে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

তার রোষানলের প্রথম শিকার হলেন আহমদ সফির ঘনিষ্ট্যজন প্রেসসচিব মুনির আহমদ। কোন প্রকার অভিযোগ বা কারণ ছাড়াই আনাসের একক সিদ্ধানে মুনিরকে প্রেসসচিব ও মাসিক মঈনুল ইসলামের নির্বাহী সম্পাদকের পদসহ দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সব দায়িত্ব থেকে অন্যায়ভাবে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। সোমবার বিকেলে তার কাছ থেকে হিসাবপত্র ও অফিস বুঝে নিয়ে বিদায়ের কথা মৌখিকভাবে জানিয়ে দেয়া হয়।

খবর নিয়ে জানাগেছে, আল্লামা শাহ আহমদ শফী অসুস্থ্য হওয়ার আগ থেকে তার ছেলে আনাস দলের নেতৃত্ব এবং দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার কর্তৃত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তারই অংশ হিসেবে তিনি তার পথে কাটা প্রতিপক্ষদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে আসছে।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র প্রেসসচিব আনাছের এ ষড়যন্ত্রের শিকার।

এ বিষয়ে মাওলানা মুনির আহমদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “মাওলানা আনাস মাদানীর সাথে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। মাওলানা আনাস মাদানীর দাবী, আমার পেছনে কথা বের করার জন্য তিনি কর্তৃক নিয়োগ করা লোকের কাছে আমি তার বিষয়ে অসৌজন্য উক্তি করেছি।

.

গত ১৫ জুলাই হাটহাজারী মাদ্রাসার মজলিশে শূরার বৈঠক শেষে শূরা কমিটির দুইজন সদস্য বেফাক মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আবুল কাসেমসহ আরো কয়েকজন আলেমের উপস্থিতিতে উক্ত ভুলবুঝাবুঝির নিরসন হয়। তিনি বলেন, সে দিন মাওলানা আনাস মাদানী আমাকে ‘হেফাজত আমীরের প্রেসসচিব’ পদবী ব্যবহার করতে না করে দেন। তখন শূরার সদস্যগণ এই ভুল বুঝাবুঝির বিষয়টি হেফাজত আমীরের কানে দিতে মাওলানা আনাস মাদানীকে নিষেধ করেন এবং আমাদের উভয়কে বিষয়টা নিয়ে অন্য কারো সাথেও আলাপ করতে নিষেধ করেন।

এরপর গত বুধবার বেলা ১২টায় হেফাজত আমীরের খাদেম আমাকে পত্রিকা নিয়ে হুজুরের কাছে যেতে বলেন। আমি হুজুরকে পত্রিকা পড়ে শোনাই। এ সময় হুজুর আমার সাথে অত্যন্ত স্নেহপূর্ণ ও আন্তরিকতার সাথে নানা বিষয়ে কথা বলেন এবং হুজুরের এ পর্যন্ত বিবৃতিসমূহ গ্রন্থিত করে আমাকে একটা বই প্রকাশ করতে বলেন। খুব সুন্দরভাবেই হুজুরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসছিলাম।

কিন্তু পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় অফিসে আসলে মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা রাশেদুল ইসলাম, মাওলানা আবু সাঈদ ও হিসাব রক্ষক মুহাম্মদ রফিক আমাকে জানান, হেফাজত আমীর ভোর বেলাতেই তাদের জানিয়েছেন, আমার কাছ থেকে হিসাব বুঝে নিয়ে আমাকে বিদায় করে দিতে। কিন্তু এর কোন কারণ তারা নিজেরাও জানেন না বলে প্রকাশ করলেন। পরে আমি সময় চাইলে তারা মাওলানা আনাস মাদানীর সাথে কথা বলে দুই দিন সময় দেওয়ার কথা জানান। এর এক ঘণ্টা পর তারা আবার এসে জানান, তাদেরকে বলা হয়েছে সোমবার সকালের মধ্যেই সকল হিসাব যেন চুড়ান্তভাবে বুঝে নেওয়া হয়।

এরপর শুক্রবার মাগরীবের পর হেফাজত আমীরের কার্যালয়ে গিয়ে হুজুরের কাছে আমার অজানা ভুলের জন্য বার বার ক্ষমা প্রার্থনা করি। কিন্তু আমি বুঝতে পারি, আমার বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর হতাশ হয়ে হিসাবপত্র গোছানোর কাজ শুরু করি। গত শনিবার ও রবিবার দুই দিনে কাজের ফাঁকে পরিস্থিতি বুঝার জন্য আমি সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, শিক্ষাপরিচালক মুফতী নূর আহমদ, মুহাদ্দিস মাওলানা কবীর আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, আবাসিক হল পরিচালক মুফতী জসীম উদ্দীন ও বোর্ডিং পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ ওমর সহ সিনিয়র প্রায় এক ডজন শিক্ষক-কর্মকর্তার কাছে গেলে তারা কেউই এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করে আমার প্রতি সমবেদনা জানান।

গতকাল সোমবার বেলা দেড়টার মধ্যেই মাদ্রাসার হিসাব বিভাগে হিসাব রক্ষক মুহাম্মদ রফিক ও মাওলানা এনামুলক এর কাছে মাসিক মুঈনুল ইসলামের হালনাগাদ পর্যন্ত সকল হিসাব বুঝিয়ে দেই। তারপর বিকেল সাড়ে ৫টায় মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতী রাশেদুল ইসলাম, মাওলানা আবু সাঈদ ও হিসাব রক্ষক মুহাম্মদ রফীক আমার কাছ থেকে মাসিক মুঈনুল ইসলাম কার্যালয় ও কম্পিউটার বিভাগ বুঝে নেন। এরপর মৌখিকভাবে মাদ্রাসার সকল দায়িত্ব থেকে আমাকে বিদায় দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন”।

অব্যহতি দেওয়ার ব্যাপারে মাওলানা মুনির আহমদের কোনো বক্তব্য আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। ১৯৯৫ সালের জানুয়ারী মাস থেকেই হাটহাজারী মাদ্রাসায় দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমি মনে করি, দীর্ঘ ২৩ বছরের এই সময়ে আমার সাধ্যানুপাতে আমি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছি। মাওলানা আনাস মাদানীর ব্যক্তিগত অসন্তুষ্টির কারণে আমাকে দীর্ঘ ২৩ বছরের কর্মস্থল থেকে অব্যহতি পেতে হবে, কল্পনাও করিনি। আমার কাজের মূল্যায়ন দেশবাসী করবেন। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। অনেক কথা বলার থাকলেও আমি ধৈয্যধারণের চেষ্টা করছি। আমি সকলের দোয়া চাই’।

অন্যদিকে মাওলানা মুনির আহমদকে অব্যহতি দেয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছেন ইসলামী পত্রিকা পরিষদ। পরিষদের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা শহীদুল ইসলাম কবীর কর্তৃক পাঠানো প্রতিবাদে বলা হয়েছে, উপযুক্ত কারণ দর্শানো ব্যতীত মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা মুনির আহমদকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্তে ইসলামী পত্রিকা পরিষদ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক মুফতি নুর আহমদ পাঠক ডট নিউজকে বলেন, মুনির সাহেবকে কিভাবে কি কারণে অব্যাহত দিয়েছে তা আমরা কেউ জানি না। কোন কারণ দর্শানো ছাড়া কেন অব্যাহতি দেয়া হলো এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে কোন আইন কানুনের প্রয়োজন হয় না। হুজুর যা বলেন তাই আইন।

এদিকে এসব বিষয়ে জানতে মাওলানা আনাস মাদানীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

এ ছাড়া হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজত নেতা আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print