
রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটির পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ও কোতয়ালী থানার ওসিকে প্রত্যাহারে ৪৮ঘন্টার সময় বেধে দিয়েছে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সোমবার সন্ধ্যায় আঞ্চলিকদলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপায়ন চাকমা প্রহৃত হওয়ার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে এবং রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে পুলিশের পক্ষ থেকে টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপসহ লাঠিচার্জের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাঙামাটি শহরে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শেষে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগের অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটামের ঘোষণা দেয়।
মঙ্গলবার বিকেলে রাঙামাটি বনরূপা বিএম মার্কেট প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর একের পর এক হামলার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণসহ গুরুত্বর আহত হলেও পুলিশ এসব ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার নাকরে উল্টো তাদের সাথে আঁতাত করে সরকারদীয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর নির্বিচারে গুলি-টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
এই ধরনের হামলার সাথে রাঙামাটির পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জের প্রত্যক্ষ ইন্ধন রয়েছে। তাদের নেতৃত্বেই শহরে সোমবার রাতে বিক্ষোভরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপর এই হামলা চালানো হয়। তাই উক্ত তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রাঙামাটি থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে যেতে হবে।
অন্যথায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মূছা মাতব্বরের অনুমতিক্রমে রাঙামাটি জেলায় হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচীর মাধ্যমে পুরো জেলা অচল করে দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সূজন।
এদিকে, সোমবার সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীদের হাতে মারধরের শিকার হওয়া ছাত্রলীগ নেতাকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে। এরআগে সুপায়নের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাতে রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করার সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন প্রতিবন্ধি যুবকসহ দুইজন রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছে।
এসময় দুই এডিশনাল এসপি, কোতয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই লিমন বোস, এএসআই আমিনুলসহ পুলিশের অন্তত ১০জন সদস্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ সত্যজিৎ বড়ুয়া। অপরদিকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুলিশের টিয়ারশেল রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
কোতয়ালী থানা পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে পুলিশের উপর হামলাসহ কর্তব্যকাজে বাঁধাদানের ঘটনায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৪ থেকে ৫ শতাধিক অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার রাতেই কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসআই শিবু প্রসাদ দাশ বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি সত্যজিৎ বড়ুয়া। তিনি বলেন, কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়া বেআইনীভাবে রাস্তা অবরোধ করে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করে সমাবেশ, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।