
চট্টগ্রাম নগরবাসীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেনা বাহিনী ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মধ্যে। আজ সোমবার দুপুরে নগরীর রেডিসন ব্লু হোটেলে জমজমাট অনুষ্ঠানে এ সমঝোতা স্মারক সাক্ষর হয়।
অনুষ্ঠানে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম প্রকল্প বাস্তবায়নে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনসহ সিটি করপোরেশনের ‘সহযোগিতা’ কামনা করেন। জবাবে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির ‘শতভাগ সহযোগিতা’র আশ্বাসও দিয়েছেন। এতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন বিবাদমান সরকারি দুই সংস্থা সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশন জলবদ্ধতা নিরসনে পারস্পরিক বিরোধ দুর হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় জলাবদ্ধতা থেকে চট্টগ্রামবাসীকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এগিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর পর বাংলাদেশের বড় প্রকল্প চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প। চট্টগ্রামবাসী এতদিন আতঙ্কে ছিল জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে কি না। “এখন এমওইউ সাক্ষরের মধ্য দিয়ে এই আতঙ্ক দূর হবে। এরপর হবে বাস্তবায়ন। ২০১৬ সালে ওয়াসার করা ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যানের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।”

এজন্য সিটি করপোরেশনের মেয়র-কাউন্সিলরসহ সবাইকে অনুরোধ করছি সহযোগিতা করার জন্য। তারা একাজে অভিজ্ঞ। মেয়রের কাছে প্রত্যাশা তারা অভিজ্ঞতা দিয়ে সহযোগিতা করবেন।
অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগ নিয়ে যেভাবে সহযোগিতা করা প্রয়োজন তা শতভাগ করব। “যত দ্রুত আমরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হব তত মঙ্গল। নগরবাসীর কাছে অনুরোধ- বলা যত সহজ, করা তত কঠিন। এই প্রকল্পের সুফল পাব বাস্তবায়নের পর। এটা বুঝতে হবে, ধৈর্য্য ধরতে হবে।”
খালে ও ড্রেনে ময়লা-আর্বজনা ফেলার অভ্যাস পরিহার করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, এটা বন্ধ না হলে প্রতিদিন মাটি তুলেও সুফল মিলবে না। সকলকে সংকীর্ণতা উর্ধে উঠে কাজ করতে হবে।
পরে সেনাবাহিনীর পক্ষে ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্রিগেডের উপ-মহাপরিচালক লেফটেনেন্ট কর্নেল শাহরিয়ার আহমেদ ও সিডিএর পক্ষে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান বিন শামস এ মেগা প্রকল্পের সমঝোতা (এমওইউ) সই করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকশানা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য গত ৯ অগাস্ট ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) উদ্যোগে নেওয়া এ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার, গণপূর্ত ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই প্রকল্পের আওতায় খালের মাটি খনন, কাদা অপসারণ, নালা সংস্কার ও নির্মাণসহ বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপনের মত কাজও সিডিএ বাস্তবায়ন করবে।