
“রোহিঙ্গা সংকটের অর্থনৈতিক প্রভাব ও আসন্ন বাজেট” শীর্ষক নাগরিক সংলাপ আজ রবিবার দুপুরে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ বহুমাত্রিক সমস্যায় পড়েছে। সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশের ওপর। এই তিন খাতে বাংলাদেশ নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
এছাড়া রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় সামাজিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। জনসংখ্য বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সমস্যা, স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিয়ে নেতিবাচক ধারণা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ায় জীবন যাপনের ব্যয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সংকট তৈরি হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান শুরুর পর সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তে এ সংকট তৈরি হয়।
নগরীর আগ্রাবাদ সেন্টমার্টিন হোটেলের কাকলি হলে অনুষ্ঠিত এ সংলাপের আয়োজন করেছে সিপিডি এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)- টিআইবি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখা।
সংলাপে ফাহমিদা খাতুন জানান, চলতি বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত ৩২২ মিলিয়ন ডলার এসেছে বিদেশি দাতা সংস্থার মাধ্যমে। এসময় পর্যন্ত ৮ লাখ রোহিঙ্গার জন্য বাংলাদেশ সরকার ব্যয় নির্ধারণ করেছে ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৭৪ শতাংশ বিদেশী দাতা সংস্থার সাহায্য এলেও ব্যয় নির্ধারিত বাকি অর্থ আমাদের দেশ থেকে করা হয়। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গার হিসেব কষে বাংলাদেশ সরকার চলতি বছরের বাকি ৯ মাসের জন্য ৯৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য চেয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মায়ানমারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতিমাসে যদি ৩০০ জন করে রোহিঙ্গা ফেরত যায় তাহলে ২০২৫ সালের আগে এই সংকটের সমাধান হবে না। ২০২৫ সাল পর্যন্ত আগামী সাত বছর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, থাকা-খাওয়ার জন্য ব্যয় হবে ৪ হাজার ৪৩৩ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য ভাসানচরে ক্যাম্প নির্মাণ করতে ২৮০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল।
সভায় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিডি বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এর আগে বাজেট সম্পর্কে উপস্থিতিদের অবহিত করেন সিডিপির নির্বাহী পরিচালক ড.ফাহমিদা খাতুন।
এতে প্রফেসর আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজউদ্দিন, সনাক চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আকতার কবির চৌধুরী ও জেনারেল মেজর অব মো. এমদাদুল ইসলাম সংলাপে অংশ নেন।