
চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর যুবলীগ কর্মী অনিক হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা ও মূল খুনিসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় দুজনকে এবং কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকা থেকে অপর দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় একটি চায়না পিস্তল ও গুলি।
অনিক হত্যাকান্ডে গ্রেফতার ও চলমান প্রক্রিয়া নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় সিএমপির দামপাড়া পু্লিশ লাইনের মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান।
পুলিশ কমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিকদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে কোন হত্যাকান্ডে খুনিরা কোন ধরণের রাজনৈতিক পরিচয়ে পার পাবে না। অপরাধি যে দলেরই বা পদেরই হোক আমরা তাদের গ্রেফতার করে আইনের কাছে সোপর্দ করব।
সে প্রতিশ্রুত অনুযায়ি সম্প্রতি তিনটি খুনের ঘটনায় শতভাগ আসামি গ্রেফতার করতে পেরেছি। উদ্ধার করেছি খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ছোড়া।
তিনি বলেন, অনিক হত্যায় জড়িত মূল আসামিদের মধ্যেও ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ভারত ও মালেশিয়ার ভিসা ব্যবহার করে পালিয়ে যাওয়া এ হত্যাকান্ডের ১ নং আসামি তুষার ও ১০ নং আসামি এখলাসকে কলকতা স্পেশাল ট্রাসফোর্স ব্রাঞ্চের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর প্রধান আসামী তুষারের সেলফোনের সূত্র ধরে কুমিল্লা পুলিশের সহযোগীতায় দাউদকান্দি থেকে গ্রেফতার হয় এ হত্যাকান্ডের আরো দুই আসামি।

বিস্তারিত জানাতে গিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, অনিক মার্ডারের দুজন আসামি ভারতে অবস্থান করছে তথ্যটি সরকারিভাবে জানার পর ভারতের স্পেশাল ট্রাসফোস ব্রাঞ্চের এর সাথে ব্যাক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে চকবাজার থানা পুলিশ এবং ডিসি দক্ষিণের একটি দল। পরে ভারতীয় পুলিশ তাদের অফিসিয়াল নিয়ম কানুন শেষ করে বেনাপোলে আমাদের ইমিগ্রেশনের কাছে হস্তান্তর করে গ্রেফতার দুজনকে। দুজনকে বাংলাদেশে আনার পর তাদের সেলফোনের তথ্য থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এ হত্যাকান্ডের অন্যতম দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে হত্যাকান্ডের দায়ের করা মামলার ৫ নং আসামি জোনায়েদ আহম্মেদ শোভন সরাসরি ছুরিকাঘাত করে অনিককে খুন করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ কমিশনার।
এছাড়াও গ্রেফতারের পর তুষারের দেয়া তথ্য মতে নগরীর কোতোয়ালি থানা ব্যাটারি গলির মাছ বাজার এলাকার আশা মঞ্জিলে তুষারের বাসা থেকে একটি চায়না পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হত্যাকান্ডের ১ নং আসামি ও নগরীর কোতোয়ালি থানা ব্যাটারি গলির মাছ বাজার এলাকার আশা মঞ্জিলের মৃত কলিম উদ্দিন খসরুর ছেলে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন তুষার (৩০), অনিক হত্যা মামলার ১০ নং আসামি ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা ঢেমুশিয়া গান্দিপাড়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে এখলাসুর রহমান প্রকাশ এখলাছ (২২) বর্তমানে নগরীর কোতোয়ালি থানা ব্যাটারি গলি ধোপা পাড়া ক্লিপটন গার্মেন্টেসের মালিক প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় বসবাস করেন, ৪ নং আসামি ও চকবাজার থানা ২৭ নং দামপাড়া ১ নং গলির মো. ছগির আহম্মেদের ছেলে জোনায়েদ আহম্মেদ ঈমন (১৯) ও তার সহোদর ভাই এবং এ মামলার ৫ নং আসামি জোবায়েদ আহম্মেদ শোভন (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার ছাড়াও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসাইন। অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান, এডিসি আব্দুর রউফ, চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।