
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তিন সিটি করপোরেশন রাজশাহী, বরিশাল এবং সিলেটে দুই বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অংশগ্রহণে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে এই তিন সিটি নির্বাচন সবচেয়ে বড় নির্বাচন।
এদিকে নিজ নিজ শহরের উন্নয়নের জন্য জনগণ সিটি নির্বাচনে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করবেন বলে দাবি করেছেন দলটির মেয়র প্রার্থীরা। অন্যদিকে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা।
রাজশাহীতে মেয়র পদে লড়ছেন পাঁচজন, অন্যদিকে বরিশাল এবং সিলেটে সাতজন করে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বরিশালে আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহ ও বিএনপির মুজিবুর রহমান সারওয়ার এবং সিলেটে আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন কামরান ও বিএনপির আরিফুল হক সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন।
এদিকে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩০৬টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ভোটের দিন এসব কেন্দ্রের প্রতিটিতে ২৪ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার থেকে তিন শহরে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও আনসারের ২৫০টি নিরাপত্তা দল ভ্রাম্যমাণ বা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচনবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার জন্য পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ১১৭টি দল, র্যাবের ৮৭টি দল এবং বিজিবির ৪৮ প্লাটুন সদস্য ভ্রাম্যমাণ বা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন রয়েছে।
এছাড়া, প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জনের একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। সাতজন সশস্ত্র পুলিশ, তিনজন সশস্ত্র ব্যাটালিয়ন আনসার, দুজন সশস্ত্র অঙ্গীভূত আনসার এবং ১২ জন আনসার/ভিডিপি সদস্য লাঠিসহ দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যদিকে প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ সদস্যের নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্বে থাকবে বলে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ১৩৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১১৪টি, সিলেট সিটি করপোরেশনে ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টি এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনে ১২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১২টি ‘গুরুত্বপূর্ণ’।
এদিকে, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিন সিটির ৮৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন করে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ১ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
ব্যালট পেপারের পরিবর্তে তিন সিটির ১৫টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। বরিশালে ১১টি কেন্দ্রে এবং রাজশাহী ও সিলেটে ২টি করে কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ পাঁচজন মেয়র পদে এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬০ জন ও নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১০টি কাউন্সিলর পদে ৫২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রাজশাহীতে ১৩৮টি কেন্দ্রে মোট ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
বরিশালে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও বিএনপির মজিবর রহমান সরওয়ারসহ সাতজন এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯৫ জন ও নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১০টি কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন নির্বাচনী দৌঁড়ে সামিল হয়েছেন।
এই সিটিতে ১২৩টি কেন্দ্রে ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন ভোটার ভোট দেবেন।
সিলেটে আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরীসহ সাতজন মেয়র পদে এবং ২৭টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৭ জন ও সংরক্ষিত ৯টি কাউন্সিলর পদ ৬৬ জন নারী নির্বাচন করছেন।
সিলেট সিটিতে ১৩৪টি কেন্দ্রে মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে নির্বাচন কমিশন এই তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।