
গায়ে পড়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে অভিনব কৌশলে মালামাল ছিনতাই করার ঘটনা ঘটছে নগরীতে। এমন এক ঘটনায় রিকশাভর্তি নতুন কাপড় ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার এবং লন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করেছে নগরীর কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে এমন এক ঘটনার তথ্য উদঘাটনের খবর জানান কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন। তিনি জানান, মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরের জিপিওর সামনে থেকে ইলিয়াস নামে এক ব্যক্তির ১০৫টি থ্রি-পিস নিয়ে পালিয়ে যায় এক রিকশাচালক। পরে তিনি কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার চারজন হলেন- মো. শাহ আলম (৪০), তার স্ত্রী সাথী বেগম (৩৫), মো. হাছান (২৫) ও মো. হাসান (২৫)। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ৮৬টি থ্রি-পিস উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি মহসীন বলেন, কাপড় ব্যবসায়ী ইলিয়াছ নগরীর টেরীবাজার এলাকা থেকে ১০৫ পিস থ্রি পিছ কিনেন। পরে গন্তব্যে যেতে এক রিকশা ভাড়া করেন। কিছুদুর যাওয়ার পর রিকশাওয়ালা বলে উঠেন, ‘টানতে কষ্ট হচ্ছে। নেমে একটু ধাক্কা দেন।’ রিকশাওয়ালার কথা শুনে রিকশা থেকে নামেন ইলিয়াছ। এসময় সামনে থেকে আসা এক আগন্তুক সাথে ধাক্কা লাগে তার। ‘সরি’ বলে তিনি ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই আগন্তুক তাকে গালাগাল শুরু করলেন। ইলিয়াছ তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তার গালাগাল আরও বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ইলিয়াছও ক্ষেপে গিয়ে তার সাথে ঝগড়া শুরু করে দেন তার সাথে। এসময় সেখানে বেশ ভিড় লেগে যায়। পরে আশেপাশের লোক এসে তাদের ঝগড়া মিটিয়ে দেন। ঝগড়া শেষ হয়। আশেপাশের লোকও সরে যায়। কিন্তু এ কি! ইলিয়াছের ভাড়া করা সেই রিকশা নেই। নেই তার সেই ১০৫ পিস থ্রি পিছও। এমনকি মুহুর্তে হাওয়া সেই ঝগড়াটেও আশেপাশে অনেক খুঁজেও সেই কাপড়ের কোন হদিস না পেয়ে তিনি দ্বারস্থ হন আমাদের। অভিযোগ পেয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে আটক করে টিম।
গ্রেফতারের পর অভিনব এই ছিনতাই দলের নেতা শাহ আলম পুলিশকে জানায়, তারা দুই দলে বিভক্ত হয়। একদলে থাকে রিকশাওয়ালা। সে মালামালসহ যাত্রী ভাড়া করে। একটু পরেই সে রিকশা টানতে কষ্ট হচ্ছে বলে যাত্রীকে ধাক্কা দিতে বলেন। যাত্রী রিকশা থেকে নামতে গেলেই দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন দলনেতা শাহ আলম। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সেই যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে ফেলেন। এসময় সেখানে ভিড় জমে গেলে সুযোগ বুঝে রিকশা নিয়ে চম্পট দেয় প্রথম দলটি। আর ভিড় কমার সাথে সাথে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যায় শাহ আলম। দলের একমাত্র মহিলা সদস্য সাথী শাহ আলমের স্ত্রী। সে ছিনতাই করে আনা এসব মালামাল হেফাজত করে। পরে সুযোগ বুঝে বাজারে বিক্রি করে।
অভিনব এই ছিনতাই আমাদের কাছে নতুন হলেও শাহ আলম এই পেশায় নতুন নয়। এর আগেও সে একই অভিযোগে চারবার গ্রেফতার হয়েছিল বলে যোগ করেন ওসি মহসীন। তিনি বলেন, এ চক্রের সদস্যরা কাজীর দেউড়ি, রেয়াজউদ্দিন বাজার ও টেরিবাজার এলাকায় মালামাল সাঙ্গে থাকা যাত্রীদের টার্গেট করে। টার্গেট অনুযায়ী যাত্রী পেলে তারা কৌশলে মালামাল নিয়ে চম্পট দেয়।