
আনোয়ারা ও কর্ণফুলী দুই উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১৩ আসনে প্রচারণায় এখনও অনেক পিছিয়ে বিএনপি প্রার্থী সরওয়ার জামাল নিজাম। নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর গত ১৫ দিনে তিনি মাত্র ৩ দিন এলাকায় গেছেন। এর মধ্যে কর্ণফুলী উপজেলায় এক দিনও প্রচারণায় ছিলেন না।
বুধবার তিনি কর্ণফুলী উপজেলায় প্রথম প্রচারণায় আসবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এর এক দিন পর বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে শেষ হয়ে যাবে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা। প্রচারণার সময় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরও এই ঢিলেঢালা অবস্থায় খোদ বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপির প্রচারণা কম হওয়ার পেছেনে নানা জন নানা কথা বলছেন। কেউ কেউ সরাসরি সরওয়ার নিজামের দিকে আঙ্গুল তুলছেন।
চট্টগ্রাম-১৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে বর্তমান সংসদ সদস্য ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আক্তাাংজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে জাবেদ ওই আসন থেকে দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন তিনবারের সংসদ সদস্য ও পাঁচবার মনোনয়ন পাওয়া বিএনপি নেতা সরওয়ার জামাল নিজাম। দুজনই চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি।
গণসংযোগে নেমে জাবেদ আনোয়ারা-কর্ণফুলী এলাকার গ্রামে গ্রামে ঘুরলেও সরওয়ার জামাল নিজামের তৎপরতা দৃশ্যমান নয় বলে জানিয়েছেন খোদ বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতরাই। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ভোটের মাঠে তেমন সিরিয়াসও নন এই প্রার্থী। এলাকায় পোস্টার-ব্যানারও তেমন নেই সরওয়ার জামাল নিজামের।
ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে ১৪ ডিসেম্বর বরুমচড়ায় প্রথম দফা প্রচারের ১০ দিন পর সোমবার দ্বিতীয় দফা এলাকায় যান সরওয়ার নিজাম। এরপর মঙ্গলবার তিনি এলাকায় তার তৃতীয় দিন পার করেছেন। দু’টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপির ভোট ব্যাংক হিসাবে পরিচিত কর্ণফুলীতে এখন পর্যন্ত এক দিনও যাননি বিএনপির এই প্রার্থী । বুধবার তিনি প্রথম কর্ণফুলী উপজেলায় যাবেন বলে শোনা যাচ্ছে। অথচ ৩ লাখ ৪ হাজার ৭৫৭ ভোটারের এই আসনে ১ লাখ ৭ হাজার ৮০২ জনই কর্ণফুলী উপজেলায়। সাংসদ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের চেষ্টায় নতুন কর্ণফুলী উপজেলা গঠিত হওয়ায় এমনিতেই এই উপজেলায় ব্যাকফুটে আছে বিএনপি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, গত ১০ বছর ধরে কার্যত বিএনপির রাজনীতিতে তিনি নিস্ক্রিয় ছিলেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। এখন মাঠের অবস্থা বুঝতে পেরে তিনি ঢিলেঢালা প্রচার চালাচ্ছেন।
কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মামুন মিয়া বলেন, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে আমাদের ভোটব্যাংক ও সাংগঠনিক শক্তি থাকার পরও প্রতিকূল অবস্থার কারণে আমরা আশানুরূপ প্রচার-প্রচারণা করতে পারিনি। নির্বাচনের জন্যও আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। তবে আর যে কয়েকদিন সময় আছে, এর মধ্যে আমরা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছি।
হাল ছেড়ে দিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে সরওয়ার জামাল নিজাম বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেও নির্বাচনের মাঠে আছি। আমার সঙ্গে জনগণ আছে। নেতাকর্মীরাও ঐক্যবদ্ধভাবে আমার সঙ্গে আছেন। কিন্তু নির্বাচনের পরিবেশ এমন যে, টিকে থাকা কষ্টকর। তবে মাঠ ছাড়ব না। ভোটের দিন পর্যন্ত দেখব।