১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মৃতিধন্য মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বৃহস্পতিবার।
বাঙালি জাতির ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ভাষা আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল নিজের মাতৃভাষার পাশাপাশি নিজস্ব সত্তা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করা।
এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘ইনডিজিনাস ল্যাঙ্গুয়েজেস ম্যাটার ফর ডেভলপমেন্ট, পিস বিল্ডিং এন্ড রিকনসিলিয়েশন’।
দিবসটি উপলক্ষে তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে জীবন দেয়া বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সাধারণ মানুষ খালি পায়ে ফুল নিয়ে শহিদ মিনারে হেটে যাবেন। তাদের কণ্ঠে থাকবে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি…।’
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ ২১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন।
এদিকে, অমর একুশে উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৯ উপলক্ষে আমি বাংলাভাষীসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগণ ও জাতিগোষ্ঠীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’
মহান ভাষা আন্দোলনকে বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা উল্লেখ করে তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী ভাষা শহিদ রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার ও শফিউরসহ নাম না জানা শহিদদের স্মরণ করেন।
‘বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা আজ অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস। এ চেতনাকে ধারণ করে পৃথিবীর নানা ভাষাভাষী মানুষের সাথে নিবিড় যোগসূত্র স্থাপিত হোক, লুপ্তপ্রায় ভাষাগুলো আপন মহিমায় নিজ নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে উজ্জীবিত হোক, গড়ে উঠুক নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির বর্ণাঢ্য বিশ্ব- মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এ কামনা করি,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক।
তিনি ভাষা শহিদের স্মৃতির পাশাপাশি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সব ভাষা সৈনিকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আসুন, মহান একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
