
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নগরী ছিল। আমরা অর্থনীতির স্বার্থে চট্টগ্রামকে ধ্বংস করছি। মহানগরীর অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে, নগরীর খালগুলো পরিপূর্ণ ভাবে খনন করতে হবে। আমি পুরানো খাল উদ্ধার করবো। দখলবাজ যেই হোক এই বিষয়ে আমি কঠোর অবস্থানে থাকবো। ছোট বেলায় জিইসি মোড় এলাকা গেলে পাহাড়ের সারি দেখতাম। নগরীর উন্নয়ন ও অব্যবস্থাপনার কারণে পাহাড় ধ্বংস করা হয়েছে। এখন জিইসি মোড় পার হলেই সমুদ্র দেখা যায়।
নগরীকে জলাবন্ধতা মুক্ত করতে হলে অতীতে যে প্রাকৃতিক জলাধার ছিল তা আবার সৃষ্টি করতে হবে। বিশেষজ্ঞের মতামত ও ফিজিবেলিটি স্টাডি করে জলাধার সৃষ্টি করার চেষ্টা করবো।
আমি জননেত্রি শেখ হাসিনারকাছে কৃতজ্ঞ। গত ২৭ জানুযারি শেখ হাসিনার উন্নয়নে আস্থা রেখে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমি সেই আস্থার প্রতিদান দিব।
তিনি রবিবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
ক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চলনায় এতে বক্তব্য রাখেন,শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, সিনিয়র সহ সভাপতি সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা,প্রাক্তন সভাপতি কলিম সরোয়ার, সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইলসাম, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম প্রমুখ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, শফিকুল ইসলাম ফারুক, চন্দন ধর, নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ হোসেন, নিলু নাগ, হুরে আরা বিউটি, তসলিমা নুরজাহান রুবি, আনজুমান আরা, রুমকি সেন গুপ্ত, শাহীন আকতার রোজি প্রমুখ।
মত বিনিময় সভায়, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি স.ম. ইব্রাহিম, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ,গ্রন্থাগার সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, মোয়াজ্জেমুল হক, দেবদুলাল ভৌমিক, মঞ্জুর কাদে মঞ্জু,সিনিয়র সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, দেবপ্রসাদ দাশ দেবু, জসিম চৌধুরী সবুজ, মোস্তাক আহমেদ, শামশুল হক হায়দারী, নির্মল চন্দ্র দাশ, আসিফ সিরাজসহ বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
রেজাউল করিম আরো বলেন, আমি দীর্ঘ দিন রাজনীতি করে আসছি।চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করেছি। চিরজীবন কল্যানের রাজনীতি করেছি। লোভ লালসা ছিলনা। মেয়রের চেয়ারে বসেও তার ব্যাতিক্রম হবেনা। সব সমস্যা সমাধান একসাথে সম্ভব নয়। তবে আমি নতুন ধারার প্রবর্তন করবো। সাংবাদিক সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবি প্রকৌশলী ডাক্তার সবাইকে একটি পরামর্শক কমিটি করা হবে। সকলের পরামর্শে এবং নগরবাসির কল্যাণেযা প্রযোজ্য হবে তাই গ্রহন করবো।
তিনি বলেন, নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি চট্টগ্রাম। আমাদের অবহেলায় ধ্বংস হয়েছে চট্টগ্রাম। নগর রক্ষা করার দায়িত্ব আপনার আমার সবার।প্রত্যেকের মতামত গ্রহন করে পরিকল্পিত মহানগর গড়ে তোলার জন্য কাজ করবো। অন্যতায় যে চট্টগ্রাম সেই চট্টগ্রাম থেকেই যাবে।
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য সেবা অবহেলিত। করোনার শুরুতে চট্টগ্রামে একটাও হাইফ্লোনেজল ক্যানোলা ছিলনা। আমি সরেজমিনে করোনার সেবা করতে গিয়ে দেখেছি মানুষ কতো অসহায়।
আমি চসিক থেকে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা সেবা চালু করে ভাসমান মানুষের সেবা করার ব্যবস্থা করবো। তারাও এই শহরের নাগরিক। তাদের দেখার কেউ নাই। আমি অতীতে সন্ত্রাসকে প্রচয় দেয়নি। এখনো দিব না। মাদক বয়বসায়ী ইয়াবা ব্যবসায়ী যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না। এই কাজে সমাজের মহল্লা কমিটিকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি তাদের নিরাপত্তা দিব।
তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে চট্টগ্রামে অনেক খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থান ছিল। এখন সবখানে ভবন। খেলার মাঠ নাই। চসিক থেকে সরকারি খালি স্থানে মাঠ সৃষ্টি করার চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, মহানগরীকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে সাংস্কৃতিক মঞ্চ করতে হবে।