
কাগজ আমদানীর নামে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আনা ১ কোটি ৬২ লাখ সিগারেটের প্যাকেটে জাল ব্যান্ড রোল (স্ট্যাম্প) জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এতে সরকারের ১০০ কোটি টাকার রাজস্ব চুরির অপচেষ্টা বন্ডুল হয়ে গেল।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এআইআর শাখার ডেপুটি কমিশনার শরফুদ্দীন মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন জুবিলি রোডের ১২৮, কাদের টাওয়ারের চতুর্থতলার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আরাফাত এন্টারপ্রাইজের নামে চালানটি বন্দরে আসে। ঘোষণা ছিল এফোর পেপার অল পারপাস, ডিডিজি এমডব্লিউ ৮০জিএসএম। এ চালানের বিপরীতে ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড জুবিলি রোড থেকে এলসি ইস্যু হয়েছিল গত ৮ নভেম্বর।
খবর নিয়ে জানা গেছে, বিশাল এ চালানের সাথে নগরীর এক ওয়ার্ড কাউন্সিলের নেতৃত্বে ঈদগাঁ হালিশহর এলাকার একটি চোরাকারবারীর দল জড়িত। গোয়েন্দা সংস্থা ইতোমধ্যে তাদের চিহ্নিত করে তদন্ত শুরু করেছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, আজ বুধবার (২২ ডিসেম্বর) এ চালানের কনটেইনাটি ফোর্স কিপ ডাউনের মাধ্যমে নামিয়ে বন্দরের ভেতরে নিয়ম অনুযায়ী এআইআর টিম পরীক্ষা শুরু করে। শতভাগ কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে সব পণ্যের প্যাকেট কেটে দেখা হয়। এ সময় কনটেইনারটিতে থাকা ১২ প্যালেটের মধ্যে ৪টিতে ১২০ কার্টন (নিম্নস্তর ১০৫ কার্টন ও মধ্যম স্তর ১৫ কার্টন) বাংলাদেশের সিগারেটে ব্যবহারের উপযোগী হালকা সবুজ ও হালকা খয়েরি রঙের জাল স্ট্যাম্প পাওয়া যায়। প্রতি কার্টনে ২৭০ বান্ডিল এবং প্রতি বান্ডিলে ৫০০ পিস হিসেবে মোট ১ কোটি ৬২ লাখ পিস ব্যান্ড রোড বা স্ট্যাম্প ছিল এ চালানে। এর মধ্যে নিম্নস্তরের ১ কোটি ৪১ লাখ ৭৫ হাজার পিস এবং মধ্যম স্তরের ২০ লাখ ২৫ হাজার পিস রয়েছে। যার ওজন ১ হাজার ২০০ কেজি। বাকি ১ হাজার ১৪০ কার্টনে এফোর সাইজের কাগজ পাওয়া গেছে যার মোট ওজন ১৪ হাজার ৩৮০ কেজি এবং নিট ওজন ১২ হাজার ৫৪০ কেজি।
কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার শরফুদ্দীন মিয়া বলেন, চীন থেকে এ ফোর সাইজের ৮০ জিএসএম কাগজ আমদানি করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আরাফাত এন্টারপ্রাইজ। কাগজের আড়ালে চালানটিতে সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প আছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। চালানটির এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কতটি ব্যন্ডরোল পাওয়া গেছে তা পরে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) চীন থেকে আর্ট পেপারের ভেতর লুকিয়ে আনা ৩ কোটি ১৯ লাখ ৮০ হাজার পিস সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। ৯০ থেকে ১৪৩ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামে চট্টগ্রামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।