চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপনির্বাচনকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আবদুস সামাদ। একই দাবি করেছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. কামাল পাশাও।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে নগরীর মোমিন রোডের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, স্মরণাতীত কালের সর্বনিম্ন ভোটারের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম-৮ আসনে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ম্যাজিস্ট্রেট, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মী বেষ্টিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে ঐতিহাসিক একটি প্রহসন হয়েছে।
এই নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫ শতাংশ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতির এজেন্টদেরকে সকাল ৯টার মধ্যে বের করে দেয়া হয়। অনেক কেন্দ্রের মধ্যে এজেন্টদেরকে ঢুকতেও দেয়া হয়নি। মাত্র ৫-১০ শতাংশ কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট হলেও ঐসব কেন্দ্রে ভোটার ছিল হাতে গোনা। আমরা নির্বাচন কমিশনে ৬টি অভিযোগ দিলেও একটি অভিযোগের ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
৪৪ নম্বর বেংগুরা কে.বি.কে আর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আমাদের মোমবাতির সমর্থক ও ভোটার মাওলানা তাজুল ইসলাম ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করলে স্থানীয় মেম্বার আব্বাস উদ্দিন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম এর নেতৃত্বে আক্রমণ করে ভোট কেন্দ্র থেকে বাহির করে দেয়। ১৭১নং জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মহিলা মাদ্রাসা কেন্দ্রে সন্ত্রাসী অভি উন্মুক্তভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করে আমাদের বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট কর্মী মুহাম্মদ আইয়ুবকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
৬০ নম্বর দেওয়ানবিবি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চরণদ্বীপ ইউনিয়ন ইসলামী ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদককে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাত কেটে ফেলার চেষ্টা করে। তাতে সে রক্তাক্ত হয়।
এইভাবে প্রতিটি কেন্দ্রের যদি বর্ণনা দেওয়া হয় তা শেষ হবে না। আমরা দুপুর ১টার মধ্যে প্রায় ৬৫টি কেন্দ্রের অনিয়ম নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করি। জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা রাজু আহমেদ প্রথমে আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করতে না চাইলেও পরবর্তীতে তিনি ৩৯ নম্বর কেন্দ্র উত্তর শাকপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে ফোন করে নিশ্চিত হয় যে মোমবাতির এজেন্টদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং গোপন বুথে মিলি নামের ছাত্রলীগ নেত্রী সহ অবাঞ্ছিত লোকেরা জোরপূর্বক প্রবেশ করে মোমবাতির কর্মীদেরকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করছে। এভাবে ৬৫ কেন্দ্রে নিয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট পৃথক পৃথক অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে অভিযোগ গ্রহণ করে। কিন্তু তিনি তাৎক্ষণিক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন। ম্যাজিস্ট্রেট, প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদারকে বারবার অবহিত করার পরও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অতএব আমরা এই প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনে আমরা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতে যেতে বাধ্য হব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এম সোলায়মান ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব আবদুর রহিম, রেজাউল করিম তালুকদার, সহকারী দপ্তর সচিব ইঞ্জিনিয়ার নূর হোসেন, সহকারী দপ্তর সচিব মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলামসহ অনেকে।