ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

রাঙামাটিতে তিনমাস ধরে নিখোঁজ বনকর্মী খলিল

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

আলমগীর মানিক,রাঙামাটিঃ
রাঙামাটিতে বনবিভাগের এক সদস্য দীর্ঘ ৮৬ দিন যাবৎ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে থাকায় তার পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। গত ৮ই মার্চ থেকে নিখোঁজ হওয়া বনকর্মী খলিল মিয়ার খোঁজে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে তার পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খলিলের স্ত্রী জরিনা বেগম জানান, তার স্বামী খলিল মিয়া রাঙামাটি উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় দপ্তরের বাগানমালী হিসেবে কর্মরত ছিলো।

শহরের ফরেষ্টকলোনী এলাকায় বনবিভাগেরই সরকারি কোয়ার্টার এ পরিবার পরিজন নিয়েই বাস করতো খলিল মিয়া। প্রতিদিনের ন্যায় গত গত ৮ই মার্চ দুপুর দুইটার সময় কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হন তিনি। এরপর থেকে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা।

জরিনা বেগম জানান, এরপর ১০মার্চ আমাকে ফোন করে তিনি জানান, আমি অফিসের কাজে চট্টগ্রাম এসেছি রোববার বিকেলে ফিরবো। এরপর থেকে আমার স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ রয়েছে। এতে আমাদের পরিবারের সকলের উদ্যোগের সৃষ্টি হলে আমি আমার সকল স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেও তার কোনো হদিস পাইনি।

এরপর আমি বিষয়টি বনবিভাগের উদ্বর্তন কর্মকর্তাদের অবহিত করি। এতেও আমি কোনো প্রকার সুরাহা নাপেয়ে পরে ১৭ মার্চ কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। এতেও কোনো সুরাহা পাইনি। জরিনা বেগম জানান, আমার স্বামী নিখোঁজের পর আমার বাড়িতে আসে বনবিভাগের শিশক রেঞ্জের বাগানমালী বুলবুল। তিনি এসময় আমাকে জানান, তিনি আমার স্বামীকে চট্টগ্রামে দেখেছেন এবং একসাথে চা খেয়েছেন। এসময় তার হাতে চার লাখ টাকাও দিয়েছেন। এছাড়াও আমার স্বামীর কাছে তিনি ১৬ লাখ টাকার মতো বকেয়াও পান।

এসময় আমার সন্দেহ হলে তার কাছে চট্টগ্রামের ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি জানাননি। এসময় আমি বুলবুলের কাছে জানতে চাই, আমার স্বামী বাসায় থাকতে এতোদিন আপনি টাকার দাবি নিয়ে আসেন নাই কেন? এছাড়াও এতোগুলো টাকা আপনি কেনই বা দিলেন এবং কিসের ভিত্তিতে দিলেন?? এসব প্রশ্ন করাতে বুলবুল কোনো উত্তর নাদিয়ে সটকে পড়লো। এসময় আমি বিষয়টি ফরেষ্টের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বুলবুলের মাধ্যমে আমার স্বামীকে খুঁজে বের করার দাবি জানাই। জরিনা বেগম জানান, বুলবুলের কথায় আমার সন্দেহ হওয়ায় আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাই।

এসময় কোতয়ালী থানার তৎকালীন এসআই নুরুন্নবীর পরামর্শে আমি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এডভোকেট আফছারের মাধ্যমে একটি ফৌজদারি নালিশ দায়ের করি। আদালত বিষয়টি শুনে সিএসআইয়ের মাধ্যমে কোতয়ালী থানাকে বিষয়টি তদন্ত করতে মৌখিক নির্দেশনা দেন। পরে আমি কোতয়ালী থানায় গেলে তারা জানায় কোর্ট থেকে কোনো কাগজ থানায় যায়নি। তাই তারা বিষয়টি নিয়ে এগুতে পারছেন না।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা সফিকুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, ব্যাপারটি নজরে আসলে আমি বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উদ্বর্তন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে খলিলের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বরাবরে একটি পত্রও দিয়েছি। তিনি জানান, লেনদেনের বিষয়টি কতোটুকু সঠিক সেটি আমি জানিনা। এছাড়াও এটা আমাদেরকে জানিয়ে কেউ করে নাই। জরিনা বেগমের কাছ থেকে জেনে আমি বুলবুলকে ডেকে বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্যদিয়ে খলিলকে খুঁেজ বের করতে যা যা করনীয় সেটি করার জন্যে বলে দিয়েছি। জনাব সফিকুল ইসলাম বলেন, খলিলকে খুঁজে বের করতে পারলেই পরে সব জানা যাবে। আগে আমাদের সকলেরই উচিত তাকে খুঁজে বের করা। আর এবিষয়ে আমার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে রোববার কথা বললে রাঙামাটি কোর্টের আইনজীবি এডভোকেট আফছার আলী জানান, খলিলের স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত সেসময় লিখিত আদেশ প্রদান না করে সিএসআইয়ের মাধ্যমে মৌখিক আদেশ প্রদান করেছিলেন। কিন্তু সেটাকে গুরুত্বদেয়নি পুলিশ। তাই সোমবার আবারো আদালতের দৃষ্টি আর্কষণ করলে সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সাবরিনা আলী’র আদালত আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই মামলাটিকে এজাহার হিসেবে নিতে কোতয়ালী থানাকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ সত্যজিৎ বড়ুয়া জানিয়েছেন, সোমবার রাতে আদালতের একটি নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। সেই আলোকে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কান্না জড়িত কন্ঠে জরিনা বেগম এই প্রতিবেদককে জানান, তিনটি সন্তান নিয়ে আমি চরম কষ্টে দিনানীপাত করছি এটা জানালে বনবিভাগের আমার স্বামীর সহকর্মীরা চাঁদা তুলে আমাকে কিছু টাকা দিলে আমি কোনোমতে দু’বেলা খাওয়াতে পারছি সন্তানদের। কিন্তু রমজান মাসের অধিকতর খরছ এবং ছোট দুই সন্তানের পড়ালেখার খরছও চালাতে পারছিনা বিধায় বড় সন্তানটিকে পড়ালেখা বন্ধ করিয়ে একটি দোকানে চাকুরিতে দিয়েছি। জরিনা বেগম অভিযোগ করেন, আমার স্বামী নিজে থেকে নিখোঁজ, নাকি তাকে অপহরণ করে নিখোঁজ করে রাখা হয়েছে সেটি খুজে বের করার দায়িত্ব তার উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের বা প্রশাসনের। তিনটি সন্তান নিয়ে গত তিনটি মাস আমি চরম কষ্টের মাঝে দিনানিপাত করছি।, আমি দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কেউই আমার স্বামীকে উদ্ধারে সহযোগিতা করেনি উল্লেখ করে প্রতিবেদককে তিনি জানান আপনাকে জানানোর পর আপনি অফিসের সাথে যোগাযোগ করেছেন বিধায় অফিস এখন আমাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে। এরআগে আমি অফিসে গেলে সেখানে আমার সাথে নির্মম দূর্ব্যবহারও করেছে কয়েকজন। আমার স্বামীকে আগে বের করে দেন, আমার বাচ্চাগুলোকে নিয়ে আর পারছিনা বলে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন জরিনা বেগম।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print